বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দায়ের হওয়া ‘পুলিশ হত্যা মামলায়’ প্রধান দুই আসামি তাদের জবানবন্দি প্রত্যাহার করে নিলে ১৭ বছর বয়সী হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজকে আদালতে যেতে হতো না। জুলাইয়ের আন্দোলনকারী ফাইয়াজের মামলা এখনো প্রত্যাহার না হওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনার প্রেক্ষাপটে এ কথা জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, মামলার তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়ায় আইন মন্ত্রণালয় কোনও চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
রোববার (২০ এপ্রিল) সকালে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ বা সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ‘৫০তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের’ উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ফাইয়াজের মামলা প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, যারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন, পুলিশ তাদের অত্যাচার-নির্যাতন করে সেটি নিয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই সরকার এসেছে ৮ মাস হয়ে গেছে। ওনারা (জবানবন্দিদাতারা) এখনো সেটি প্রত্যাহার করে নেননি কেন? এটা ওনাদের জিজ্ঞেস করেন। এটা করলে তো শিশু ফাইয়াজকে কোর্টে যেতে হতো না। দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি (ফাইয়াজ) তার ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। তাকে বলেছি, এটা হচ্ছে প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় যদি এগুনো হয়, তাহলে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব। আমি তাকে প্রক্রিয়াটি বুঝিয়ে বলেছি।
তিনি বলেন, আমাদের যতই সদিচ্ছা থাক, একটি মামলা চার্জশিট পর্যায়ে আসার পরই কেবল আইন মন্ত্রণালয় কিছু করতে পারে। তার আগে কোনো কিছু করার সুযোগ আইন মন্ত্রণালয়ের নেই। আমি আশা করবো, যারা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ আছে, তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। যারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন, তারা যেন সেটি প্রত্যাহার করার পদক্ষেপ নেন। যাতে করে এই মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, বিচারকদের অন্যায়-অবিচার করার কোনও সুযোগ নেই। সুবিধার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কোনও সম্পর্ক নেই। সুবিধা না পেলেও বিচারকদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, বিচার বিভাগেও সীমাবদ্ধতা আছে। তবে সীমাবদ্ধতা মেনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে যেন উপমহাদেশের অন্যান্য দেশগুলো থেকে প্রশিক্ষণার্থীরা বাংলাদেশে আসেন। ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এসে অনেকেই রাজনৈতিক বক্তব্য দিতেন, যোগ করেন আইন উপদেষ্টা।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি মো. এমদাদুল হক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।