আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে মূল সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করেন ডিসিরা। প্রশাসন ও বিচার বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টা জনগণের আস্থা জোরদার করে। একই সঙ্গে তৃণমূল পার্যায়ের আইনের শাসন সমুন্নত রাখে।

আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে ডিসিদের উদ্দেশ্যে দেওয়া অভিভাষণে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। চলমান ডিসি সম্মেলনের অংশ হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা স্বাগত বক্তব্য দেন। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন ও যাশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজহারুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি যখন বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলাম তখন আমার কাঁধে বিশাল দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল। দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি বিচার বিভাগীয় সংস্কারের একটি বিস্তারিত রোডম্যাপ ঘোষণা করেছি। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে বিচার বিভাগ শক্তিশালী হবে।

জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা নির্বাহী বিভাগের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, উন্নয়নমূলক কাজের তত্ত্ববধান এবং রাষ্ট্রের মর্যাদা সমুন্নত রাখার মতো সূক্ষ্ম দায়িত্ব পালন করেন। তবে আপনাদের কাজের একটি অপরিহার্য দিক হচ্ছে বিচার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা। জেলা আদালত এবং জেলা প্রশাসন, এই দুটি স্তম্ভ একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। দুটি উদ্দেশ্যের কার্যক্রম স্বতন্ত্র তবে উদ্দেশ্য অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগ মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করে। অন্যদিকে নির্বাহী বিভাগের দায়িত্ব হলো আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা, স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা সহজ করা। তাই এই দুই বিভাগের কাজ একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। তবে কোনোভাবেই বিরোধপূর্ণ হওয়া উচিত নয়।

তিনি আরও বলেন, যে জেলায় বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেখানে আইন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা বিকশিত হয়। একই সঙ্গে যেখানে স্থানীয় প্রশাসন বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে সম্মান করে, সেখানে শাসন ব্যবস্থা তার সর্বোচ্চ নৈতিক অবস্থানে পৌঁছায়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, মনে রাখবেন ভবিষ্যতে আমাদের বিচার করা হবে আমাদের ক্ষমতা দিয়ে নয়, বরং আমরা সেই ক্ষমতা কীভাবে ন্যায়বিচারের সেবায় কাজে লাগিয়েছি, তা দিয়ে বিচার করা হবে।