স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ফারমারস মিনি কোল্ড স্টোরেজ কেবল ফসল সংরক্ষণ নয়, বরং কৃষি অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ভবিষ্যতে এ প্রকল্পকে আরও সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের হাতে প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে হবে।

বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইরে ধল্লার মেদুলিয়া গ্রামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেদুলিয়া সমন্বিত কৃষক উন্নয়ন সংঘকে মিনি কোল্ড স্টোরেজের চাবি হস্তান্তর করার পর স্থানীয় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কৃষিতে মধ্যভোগীদের নিয়ন্ত্রণ করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। 'আপনারা যদি পলিথিন ও প্লাস্টিকের পানির বোতল ব্যবহার বন্ধ করতে পারেন-তাহলে সবাই পাটজাত পণ্য ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন। এই বিষয়ে ইতোমধ্যেই কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।'

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, মধ্যভোগীরা কৃষি সিন্ডিকেট করে বড় বড় বিল্ডিংয়ের মালিক হচ্ছেন। আমার কৃষকরা কুড়ে ঘরেই থাকতে হচ্ছে। ফারমারস মিনি কোল্ড স্টোরেজ কেবল ফসল সংরক্ষণ নয়, বরং কৃষি অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ভবিষ্যতে এ প্রকল্পকে আরও সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের হাতে প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে হবে। আপনাদের মানিকগঞ্জে গাজর, শীতকালীন সবজি বেশী উৎপাদন হয়। এই ব্যবস্থায় কৃষক, ভোক্তার সরাসরি উপকৃত হবেন। এ মিনি কোল্ড স্টোরেজ পরে আরও বাড়ানো হবে। প্রয়োজনে কৃষকরা নিজেরাও বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারবেন অল্প খরচে। আমারা কৃষকদের কারিগরি সহায়তা দেবো।

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে কৃষি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়িত 'জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সাশ্রয়ী কোল্ড স্টোরেজ প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষকের আয় বৃদ্ধি প্রকল্প'র আওতায় সারা দেশে ১০০টি ফারমারস মিনি কোল্ড স্টোরেজ বিতরণ করা হচ্ছে।

এর আগে তিনি কৃষকদের সরাসরি প্রশ্ন শোনেন। এতে খাল বে-দখল, বিদ্যুৎ সংযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগ শুনেন এবং তার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেন।

তিনি কৃষকদের উদ্দেশে আরও বলেন, 'আমাদের সময় সীমিত। এজন্য এর আগে একটি কৃষি আইন প্রণয়ন করা হবে-যাতে কৃষিজমি অন্য কোনো কাজে ব্যবহার না করা যায়। রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে যখন কোনো রাস্তা তৈরি করতে জমির মালিককে তিনগুণ মূল্য দেয়, একইভাবে এলজিইডিকেও দিতে হবে। এছাড়া জমির টপ সয়েল ইটভাটার মালিকদের কাছে বিক্রি করা অন্যায়। এটি নষ্ট হলে উৎপাদন কমে যায়।'

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন-কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক, মো. ছাইফুল আলম, মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক, ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা, পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াছমিন খাতুন, মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালাক ড. রবীআহ নুর আহমেদসহ প্রায় তিন শতাধিক কৃষক।