মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রবাসীদের রেমিটেন্সে অর্থনীতি মজবুত অবস্থায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের তিন দিনের মালয়েশিয়া সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়াতে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং তিনটি নোট বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম কুয়ালালামপুরের পুত্রজায়ায় প্রধানমন্ত্রীর অফিসে এমওইউ ও নোট বিনিময় স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। প্রথম নোট বিনিময়টি উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য স্বাক্ষরিত হয়। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো’ সেরি উতামা হাজি মোহাম্মদ বিন হাজি হাসান এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নিজ নিজ দেশের পক্ষে নোট বিনিময়ে স্বাক্ষর করেন। দ্বিতীয় নোট বিনিময়টি কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য স্বাক্ষরিত হয়। এতে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো’ সেরি উতামা হাজি মোহাম্মদ বিন হাজি হাসান এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে প্রথম এমওইউটি হয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে।
মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাতো’ সেরি মোহাম্মদ খালিদ বিন নরদিন এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এতে স্বাক্ষর করেন। দ্বিতীয় এমওইউটি হলো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ, এলএনজি অবকাঠামো, পেট্রোলিয়াম পণ্য ও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ে। মালয়েশিয়ার ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী দাতুক সেরি আমির হামজাহ বিন আজিজান এবং বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা এম ফওজুল কবীর খান এতে স্বাক্ষর করেন। তৃতীয় নোট বিনিময়টি হালাল ইকোসিস্টেমে সহযোগিতা বিষয়ে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের উপমন্ত্রী সিনেটর ড. জুলকিফলি বিন হাসান এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এতে স্বাক্ষর করেন।
তৃতীয় এমওইউটি মালয়েশিয়ার ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে। আইএসআইএস মালয়েশিয়ার চেয়ারম্যান দাতুক প্রফেসর ড. মোহদ ফয়জ আবদুল্লাহ এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান এতে স্বাক্ষর করেন। চতুর্থ এমওইউটি মালয়েশিয়ার মাইমস সার্ভিসেস এসডিএন. বিএইচডি. (এমএসএসবি) এবং বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই)-এর মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে। এমএসএসবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ ফওজি ইয়াহায়া এবং বিএমসিসিআইয়ের শাব্বির আহমেদ খান এতে স্বাক্ষর করেন। পঞ্চম এমওইউটি মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এনসিসিআইএম) এবং বাংলাদেশের এফবিসিসিআইয়ের মধ্যে স্বাক্ষর হয়। এনসিসিআইএম-এর সভাপতি দাতো’ সেরি এন. গোবালাকৃষ্ণান এবং এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান এতে স্বাক্ষর করেন।
এদিকে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে ব্যবসাবান্ধব করতে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অতীতে বাংলাদেশে ব্যবসা আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী এগোয়নি। তবে নতুন বাংলাদেশে অনেক কিছুই নতুনভাবে গড়ে উঠছে, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যবসার সম্ভাবনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্ভাব্য সব উপায়ে ব্যবসাবান্ধব হতে চেষ্টা করছে। আমি পরিবর্তিত বাংলাদেশে অসীম সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছি। অধ্যাপক ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সুযোগ নিয়ে আয়োজিত এক ব্যবসায়িক ফোরামে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রয়েছে তরুণ ও সৃষ্টিশীল জনগোষ্ঠী। তিনি বিনিয়োগকারীদের বিশ্বজুড়ে বসবাসরত তরুণ বাংলাদেশি প্রবাসীদের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান। বিদেশে থাকা তরুণ বাংলাদেশিদের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাদের মধ্যে সবসময় বাংলাদেশের জন্য কিছু করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য প্রদান করেন। এতে তিনি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা এবং শুল্ক ও অশুল্ক বাধা অপসারণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। সেলুলার অপারেটর রবির প্রধান শেয়ারহোল্ডার, আজিয়াটা গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিবেক সুদও বক্তব্য দেন। এতে তিনি বাংলাদেশে আজিয়াটার ২৮ বছরে ব্যবসা সম্প্রসারণ, অংশীদারিত্ব ও যৌথ সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।
এ সময় পেট্রোলিয়াম ন্যাশনাল বেরহাদ (পেট্রোনাস)-এর প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ সিইও তেংকু মুহাম্মদ তৌফিক, সার্বভৌম সম্পদ তহবিল খাজানাহ ন্যাশনাল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল ফেইসাল ওয়ান জাহির, পাম অয়েল কোম্পানি সাইম ডার্বি প্লান্টেশনস, কুয়ালালামপুর কেপং বেরহাদ (কেএলকে), আইওআই কর্পোরেশন এবং ফেলদা গ্লোবাল ভেঞ্চারস (এফজেভি)-এর শীর্ষ কর্মকর্তা, প্রোটন হোল্ডিংস বেরহাদের (প্রোটন) চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়সাল আলবার এবং গ্লোভ প্রস্তুতকারক টপ গ্লাভ কর্পোরেশনের নির্বাহী চেয়ারম্যান লিম উই চাই প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন । ব্যবসায়িক এই সমাবেশের আগে মঙ্গলবার পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি -এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
অংশীদারিত্ব গভীর করার অঙ্গীকার : মালয়েশিয়া সফরের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সেদেশের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে পুত্রজায়ার পার্দানা পুত্রা ভবনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। এ সময় উভয়ে দুদেশের সম্পর্ককে আরও গভীর এবং কৌশলগত ভবিষ্যতমুখী অংশীদারিত্বে রূপান্তরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রথমে দুই নেতা একান্ত বৈঠক করেন। এরআগে সীমিত সংখ্যক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে তারা বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জনশক্তি ও জ্বালানি সহযোগিতা, নীল অর্থনীতি, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ বিস্তৃত পরিসরের দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা করেন। প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনার শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের মধ্যে ইতিহাস, ধর্ম ও সাংস্কৃতিক সহানুভূতির ভিত্তিতে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। মানবসম্পদ, বাণিজ্য ও জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অনন্য অংশীদার।’ প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম অধ্যাপক ইউনূসকে ‘মালয়েশিয়ার বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা এবং গত এক বছরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তাঁর প্রশংসা করেন। তিনি বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণ, শিক্ষা এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। একান্ত বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস প্রটোকল জটিলতার আওতায় আটকে পড়া ৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিককে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সুযোগ প্রদান এবং মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা চালুর জন্য মালয়েশিয়াকে ধন্যবাদ জানান। এর ফলে শ্রমিকরা জরুরি প্রয়োজনে দেশে ফিরে গিয়েও চাকরি হারানোর ঝুঁকি এড়াতে পারবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। দুই পক্ষই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন, যাতে খরচ কমে এবং শ্রমিকদের কল্যাণ সুরক্ষিত হয়।
প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনায় আইন, বিচার ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল মালয়েশিয়াকে সরকার-টু-সরকার কাঠামোর মাধ্যমে আরও বেশিসংখ্যক দক্ষ বাংলাদেশি পেশাজীবী, যেমন চিকিৎসক ও প্রকৌশলী নিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বোয়েসেল বর্তমানে মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলোর জন্য শ্রমিক নিয়োগ পরিচালনার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশি নিরাপত্তারক্ষী ও সেবাকর্মীদের জন্য সুযোগ দেওয়া এবং মালয়েশিয়ায় অনিয়মিত বা অনিবন্ধিত বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়মিতকরণের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা এখন মালয়েশিয়ার শ্রমিকদের সমান সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা পাবেন এবং বাংলা ভাষায় অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। বাংলাদেশ হাজারো শিক্ষার্থীর জন্য ‘গ্র্যাজুয়েট পাস’ ভিসা চালুর অনুরোধ জানায়, যারা বর্তমানে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত। উভয় নেতা বাংলাদেশকে আসিয়ানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গভীর করার আকাঙক্ষা নিয়ে আলোচনা করেন, যার মধ্যে রয়েছে সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার মর্যাদা পাওয়ার প্রচেষ্টা। এ বিষয়ে ড. ইউনূস আসিয়ানের চেয়ার হিসেবে মালয়েশিয়ার সমর্থন কামনা করেন। অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়াকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সেপ্টেম্বর মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। তিনি রোহিঙ্গা জনগণের প্রতি মালয়েশিয়ার একের পর এক সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান। অর্থনৈতিক বিষয়ে, দুই পক্ষ বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনাকে ত্বরান্বিত করা, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে বিনিয়োগ সহযোগিতা জোরদার করা এবং মালয়েশিয়া বাংলাদেশ যৌথ ব্যবসা পরিষদ সক্রিয় করার বিষয়ে একমত হন। দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে ঢাকা বাংলাদেশের ওষুধ, ব্যাটারি, জুতা, সিরামিক ও পাটজাত পণ্যের জন্য মালয়েশিয়ার বাজারে আরও প্রবেশাধিকার চেয়েছে। বাংলাদেশ নীল অর্থনীতি ও হালাল শিল্প উন্নয়নে মালয়েশিয়ার সহায়তা কামনা করে, যার মধ্যে ঢাকার বাইরে একটি হালাল অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া আঞ্চলিক বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বে (আরসিইপি) যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে। দুই দেশই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ ও জ্বালানি সহযোগিতার নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরকে স্বাগত জানায় এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি অংশীদারিত্ব অন্বেষণে সম্মত হয়। তারা প্রতিরক্ষা, সংস্কৃতি ও পর্যটন ক্ষেত্রেও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখার প্রশংসা করেন এবং প্রখ্যাত এশীয় সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদদের নিয়ে একটি সাংস্কৃতিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দেন।
রেমিটেন্সে অর্থনীতি মজবুত অবস্থায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এক বছরের মধ্যে মজবুত অবস্থায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গতকাল মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে একটি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরশাসনের সময় টাকা চুরি করে ব্যাংক খালি করা হয়েছিল। পুরো আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের কারণে অর্থনীতি মজবুত অবস্থায় ফিরে এসেছে। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেই নির্বাচনে আপনারা ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন এ নিয়ে কাজ করছে। মালয়েশিয়ায় ব্যবসায়ী ও বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস জানান, মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বড় ধরনের বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় যারা অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন, তাদের এই জটিলতা নিরসনে সরকার কাজ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা অভিবাসন গমনেচ্ছুদের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে বিদেশে আসার পরামর্শ দেন। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার শামীম আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।