ভোটে অনিয়ম ও কারচুপি ঠেকাতে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগও চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সিইসি জানান, “আমরা চেষ্টা করছি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ করতে। অতীতে যারা অনিয়মে জড়িত ছিলেন, তাদের নির্বাচন পরিচালনায় আর দায়িত্ব দেওয়া হবে না।”
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগে এবার বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে ইসি। সিইসি বলেন, “বিগত নির্বাচনে যারা রিগিংয়ে সহায়তা করেছেন, সেই প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের আমরা পরিহার করবো। জেলা পর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এবার ব্যাংক কর্মকর্তাদের নিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি, কারণ তারা সরকারে ছিলেন না এবং রিগিংয়ে সম্পৃক্ত ছিলেন না।”
জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের পরিবর্তে এবার কিছু ক্ষেত্রে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। সিইসি বলেন, “এখন থেকে তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। শুধু নিজস্ব কর্মকর্তা হলেই তাকে রিটার্নিং অফিসার বানানো হবে না।”
তিনি জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ কয়েকটি জায়গায় ইসির কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। সে অভিজ্ঞতাও বিবেচনায় রাখা হবে।
প্রবাসে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এজন্য ‘পোস্টাল ব্যালট’ ব্যবস্থার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিইসি বলেন, “আমরা অনলাইনে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবো। প্রবাসীরা সেখানে নিবন্ধন করে ভোট দিতে পারবেন। পরে তাদের ঠিকানায় ব্যালট পেপার পাঠানো হবে।”
তবে এটি একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, “ডিএইচএল বা ফেডেক্স ব্যবহার করলে একটি ব্যালটে খরচ হবে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর সরকারি ডাক বিভাগের মাধ্যমে খরচ হবে ৭০০ টাকা।”
চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, “ব্যালট ছাপা থেকে শুরু করে ফেরত আনার সময় হাতে থাকে মাত্র ১২ দিন। এর মধ্যে কাজটি শেষ করতে হবে। এই সীমিত সময়ে কাজ করা কঠিন হলেও আমরা চেষ্টা করছি একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করতে।”