আন্দোলনরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমির শায়েখে চরমোনাই সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মচারীরা ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করছে। তারা কোন অন্যায় করছেনা। তারা রাস্তা বন্ধ করছেনা, জনদূর্ভোগও সৃষ্টি করছেনা। রবিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৫ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে সংহতি জানান মুফতি ফয়জুল করীম।

এসময় তিনি আরো বলেন,১৯৭১ সালে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। ২০২৪ সালেও আমরা আন্দোলন করেছি বৈষম্য হীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায়। নতুন বাংলাদেশে কোন বৈষম্য চলতে পারেনা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজন দীর্ঘ দিন বৈষম্যের শিকার। তারা যে দাবিতে আন্দোলন করছে তা যৌক্তিক ও ন্যায্য। তাদের দাবি মেনে নিন। নয়তো আঙ্গুল বাঁকা করতে বাধ্য হবো।

অন্তর্বর্তী সরকার ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আপনাদেরকে বসানো হয়েছে বৈষম্য দূর করতে। আপনারা এখানে (শহীদ মিনারে) আসুন। তাদের কথা শুনেন। তারা খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে কষ্ট করবে আর আপনি এসি রুমে বসে থাকবেন, তা চলবেনা।

আগামীতে প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এসময় ভবিষ্যতেও পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন তিনি।

অভিন্ন চাকুরিবিধি বাস্তবায়ন এবং দমন-পীড়ন বন্ধ, কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকরার দায়ে আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৭ দফা দাবিতে ৫ দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে দেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কয়েক হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী। বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে গত বুধবার থেকে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে তারা ।

তাদের ঘোষিত ৭ দফা দাবিগুলো হলোঃ

১. পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ফ্যাসিবাদি কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকারী, অত্যাচারী আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।

২. “এক ও অভিন্ন চাকুরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ” অথবা দেশের অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় পুনর্গঠন।

৩. মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পৌষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।

৪. মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।

৫. গ্রাহক সেবার স্বার্থে লাইনক্রুসহ সকল হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন করতে হবে।

৬. জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা/শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়নের জন্য অতিদ্রুত জনবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

৭. পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্র্বতীকালীন বোর্ড গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত করতে হবে।