রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান’কে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের লাঠিচার্জ ও বিক্ষোভকারীদের পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আহত এক ‘জুলাই যোদ্ধা’ আতিকুল ইসলামের কৃত্রিম হাত রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়-যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
আতিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার একটা হাত নেই, এটা আর্টিফিশিয়াল হাত। পুলিশ আমাকে মারতে গিয়ে সেই হাতটাও ভেঙে ফেলেছে। আবার নতুন করে হাত বানানোর মতো টাকাও নেই আমার। এটা কি কোনো সভ্য রাষ্ট্রের আচরণ?
জানা গেছে, আতিকুলসহ শতাধিক ‘জুলাই যোদ্ধা’ বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সংসদ ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। তাদের দাবি ছিল-সরকারের প্রস্তাবিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাতিল করতে হবে, নতুবা তারা স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হতে দেবেন না।
শুক্রবার সকালে তারা সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা এলাকায় ঢুকে পড়লে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে এগিয়ে যায়। অনুরোধ উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান বজায় রাখলে পুলিশ বলপ্রয়োগ করে সরিয়ে দেয়, যা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এরপর বিক্ষুব্ধরা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ফের মুখোমুখি হন। এসময় সড়কে আগুন জ্বালানো হয়, পুলিশের বাসসহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেডে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সংঘর্ষে অন্তত ২৭ জন আহত হন-এর মধ্যে পুলিশ ও বিক্ষোভকারী উভয়ই রয়েছেন। আহত আতিকুল ইসলামকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার হাড় ভাঙেনি, তবে হাতে আঘাত লেগেছে।
আতিকুলের দাবি, “এপিবিএন সদস্যরাই আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। আমি শুধু আমার অধিকার চাইছিলাম, কিন্তু তারা আমাকে শত্রুর মতো আচরণ করেছে।”
ঘটনার পর থেকে সংসদ ভবন এলাকার আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং যান চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।