বাংলাদেশে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা এখনও চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
বিবিসি বাংলার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচন নিয়ে এখনও কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্বাচন কমিশনকে জানায়নি সরকার। তবে কমিশন নিজস্ব উদ্যোগে প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে—বিশেষ করে ডিসেম্বরকে লক্ষ্য রেখে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে।
সিইসি বলেন, আমিও জানি না সুনির্দিষ্ট তারিখ। আমরা ধরে নিচ্ছি, ফেব্রুয়ারির আগে অথবা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে।
তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ ছিল “সৌজন্য সাক্ষাৎ” হলেও, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির খোঁজ নিয়েছেন তিনি।
নাসির উদ্দিন বলেন, উনি জানতে চেয়েছেন, আমাদের স্ট্যাটাস কী, আমরা কতদূর এগিয়েছি। আমি তাকে বিস্তারিত জানিয়েছি।
নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বরের ভাষণে প্রধান উপদেষ্টার "ডিসেম্বর অথবা জুন"-এর সম্ভাব্য সময়সূচি ঘোষণার পর থেকেই ইসি পরিকল্পনা সাজিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা জানি, তফসিল ঘোষণার পর ভোট পর্যন্ত গড়ে দুই মাস লাগে। সেই অনুযায়ী ডিসেম্বরের নির্বাচন হলে অক্টোবরেই তফসিল দিতে হবে।
বর্তমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও মব ভায়োলেন্স (দলবদ্ধ সহিংসতা) নিয়ে সিইসি বলেন, হ্যাঁ, এটা চ্যালেঞ্জিং। তবে অসম্ভব নয়। এখনকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই উন্নত হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচনকালে পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণে আসবে। “যখন নির্বাচন হবে, তখন দেখবেন সবকিছু শান্ত। কারণ প্রতিটি দলই চায় সুষ্ঠু নির্বাচন,” বলেন সিইসি।
তিনি আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী, বিজিবি—সব সংস্থাকে নিয়ে নির্বাচনকালীন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের সময় জনগণের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সিইসি বলেন, “জনগণ যদি আপনার সঙ্গে থাকে, কোনো মব বা বিশৃঙ্খলা নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না।”
সিইসি নাসির উদ্দিন স্পষ্ট করে বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি সরকারনির্ভর নয়। “সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশ, পরামর্শ বা গাইডেন্স আসেনি। আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
তিনি বলেন, “আমার দায়িত্ব, জাতিকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়া। সেটাই করছি।”