আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা আজকে আমাদের জাতীয় জীবনে বিরাট বড় একটি ট্র্যাজেডির দিন।
রোববার (২১ জুলাই) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে হতাহতদের দেখতে গিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, 'আজকে আমাদের জাতীয় জীবনে বিরাট বড় একটা ট্র্যাজেডির দিন। এত বড় ট্রাজিক ঘটনা, বিয়োগান্তক ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনে আর ঘটে নাই।'
উপদেষ্টা বলেন, 'আমাদেরকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে, উনারা চিকিৎসার প্রয়োজনে যতরকম প্রস্তুতি দরকার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। তারপরও যদি প্রয়োজন হয় বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনবেন। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আমাদের শিক্ষার্থীদের বিদেশ নেয়ার প্রয়োজন হলে তার ব্যবস্থা করা হবে। কোন কিছুতেই কোন ঘাটতি থাকবে না।'
ড. আসিফ নজরুল বলেন, কিন্তু আমরা যা আজ হারিয়েছি কোন কিছুর বিনিময়ে সেটা পূরণ করার মত নয়।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরায় বিধ্বস্ত হয়। এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ ১৯ জন নিহত ও ১৬৪ জন আহত হয়েছেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে বিমানটি আজ সোমবার বেলা ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয় (যা বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে জানানো হবে)। দুর্ঘটনা মোকাবেলায় এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উক্ত বিমানের বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাবার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজ এর দোতালা একটি ভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
আইএসপিআর জানায়, আহত সকলকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারসহ অ্যাম্বুলেন্স এর সহায়তায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং নিকটস্থ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্থানান্তর করা হচ্ছে।
আহতদের মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৮ জন, বার্ন ইনস্টিটিউটে ৭০ জন, ঢাকা সিএমএইচ এ ১৪ জন, উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারে ১১ জন, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে ৬০ জন এবং উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে আইএসপিআর জানায়। এই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গভীরভাবে মর্মাহত এবং হতাহতদের সর্বাত্মক চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতায় তৎপর রয়েছে।