নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সংস্কার সবার আগে জরুরি উল্লেখ করে বৃহত্তর নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে এমন নারীদের নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করে তারপর সংস্কার প্রস্তাব আনা দরকার বলে মন্তব্য করেছে নারী অধিকার আন্দোলন ।
সোমবার (২১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সম্পর্কে ‘নারী অধিকার আন্দোলন’ এ মন্তব্য করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গত ৫ই আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে । জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির উপর ভিত্তি করে নারী সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশ প্রণয়ন করেছে। সুপারিশকৃত এই রিপোর্টের কিছু অংশ ইতিবাচক হলেও কিছু বিষয় বাংলাদেশের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী সমাজের প্রত্যাশার সাথে সাংঘর্ষিক।
বাংলাদেশ এখনো CEDAW সনদের ধারা ২ ও ১৬ (১)গ, সংরক্ষিত রেখেছে; যেখানে বিবাহ, তালাকসহ পারিবারিক ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের পূর্ণ সমতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই কমিশন সেই সংরক্ষণ প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে, যা অপ্রয়োজনীয় এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অসম্মান সূচক। বরং সিডও সনদে স্বাক্ষরকালে যেভাবে এই সংরক্ষণ রাখা হয়েছিল, সেটি বজায় রেখেই এর বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো উচিত ছিল।
এই সুপারিশে সংবিধানে পরিবর্তন এনে নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চয়তাসহ অভিন্ন পারিবারিক আইন, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইন, অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন, ধর্ষন আইন, নাগরিকত্ব আইন, সাক্ষী সুরক্ষা আইনে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে।
আমরা মনে করছি, এইসব সুপারিশমালা কোরআন মাজিদের বিধানের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক এবং ইসলাম ও মুসলিম পরিচয়ের উপর একটি সুপরিকল্পিত আঘাত। যৌন কর্মকে পেশা হিসেবে সামাজিক স্বীকৃতি দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যা নারী সমাজের জন্য চরম অবমাননাকর ।
এজন্য নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সংস্কার সবার আগে জরুরি। বৃহত্তর নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে এমন নারীদের নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করে তারপর সংস্কার প্রস্তাব আনা দরকার ।
আমরা আরও লক্ষ্য করেছি যে, এই নারী সংস্কার কমিশনে মুষ্টিমেয় সমাজ বিচ্ছিন্ন নারী তাদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেছে, যা সমাজের বৃহত্তর নারীদের কোনভাবেই প্রতিনিধিত্ব করে না। এই প্রেক্ষিতে আমাদের সুপারিশ হলো—
দেশের মূলধারার নারীদের প্রতিনিধিত্বে একটি নতুন কমিশন গঠন করে এই প্রতিবেদনটি সংশোধন করা হউক, যাতে করে এটি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় ।”