গোপালগঞ্জে উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা কারফিউ শনিবার (১৯ জুলাই) রাত থেকে শিথিল করে রোববার (২০ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে একই সময় থেকে পুরো জেলায় দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে, যা বলবৎ থাকবে রাত ৮টা পর্যন্ত।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ১৪৪ ধারার আওতায় সকল ধরনের সভা, মিছিল ও জনসমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পরীক্ষার্থী, শিক্ষার্থী, জরুরি পরিষেবা এবং সরকারি অফিস এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।

রোববার সকালে গোপালগঞ্জ শহরে ঘুরে দেখা গেছে, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও জনমনে এখনও আতঙ্ক রয়ে গেছে। সকাল থেকেই অনেকেই কাজে বের হয়েছেন, দোকানপাটও ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে। তবে গ্রেপ্তার আতঙ্ক এখনও সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে।

এর আগে, গত ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরপরই ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। পরদিন পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে গেলে রাত ৮টা থেকে পুরো জেলায় কারফিউ জারি করা হয়।

এনসিপির ঘটনার জেরে এখন পর্যন্ত চারটি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। রোববার সকালেও শহরের বিভিন্ন সড়কে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান (এপিসি), পুলিশের সশস্ত্র দল ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল দেখা গেছে।

শনিবার রাতেও শহরজুড়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত হয়। তবে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে—সে বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য দেয়নি পুলিশ।

ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, কারফিউ প্রথমে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল, যার মধ্যে বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য শিথিল করা হয়েছিল। পরে সেটি বাড়িয়ে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্যকর রাখা হয়।

সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। রোববার থেকে কারফিউ পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়েছে, তবে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।