আন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ইন্টারনেট দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আইআইজি ও এনটিটিএন পর্যায়ে দাম কমানো হয়েছে। আগামী দুই এক মাসের মধ্যে গ্রাহক তার সুফল পাবে।

শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ইন্টারনেটের দাম কীভাবে আরও কমানো যায়, জনগণের ব্যবহার উপযোগী করা যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষায় ইন্টারনেট ব্যবহারে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি, তবে কৃষি ও স্বাস্থ্যে অনেক পিছিয়ে রয়েছি। এই দুই খাতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হবে।

ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, দেশে বন্যা ও ঝড়ের সময় মোবাইল ইন্টারনেট ব্যাহত হয়। বন্যা ও ঝড় আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে সেই সময়ে ইন্টারনেট সেবা কীভাবে নিশ্চিত করা যায় তা ভাবতে হবে। দুর্যোগের সময় টেলিযোগাযোগ যেন নির্বিঘ্ন থাকে, সেই উদ্যোগ নিতে হবে।

ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট করে দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানো হয়েছিলো আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমরা তখন জানতে পারিনি তখন কি হয়েছিলো।

পরে ইন্টারনেট আসার পরে আমরা জেনেছি। ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া করা হয়েছে। এটি এই সরকারের একটি বড় অর্জন।

প্রযুক্তি ইনোভেশনের ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক দেশি উদ্ভাবক সুযোগ-সুবিধার অভাবে দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই এই খাতের নতুন নতুন ইনোভেশনের খবর শুনি। সেখানে আমরা কতটুকু কন্ট্রিবিউট করছি সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। থ্রি জি, ফোরজি ও ফাইভজির ক্ষেত্রেও একই।

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের আইসিটি খাতে নারীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে সরকার কাজ করছে। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাস হবে। তখন সাইবার স্পেসে নারীদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম হব। ন্যাশনাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জে নারী উদ্যোক্তা ও কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হবো। সবুজ পাতা নামের যে উদ্যোগ সেখানেও নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

‘ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষ সমতায়ন’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ১৭ মে দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সভা সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া বিটিআরসি প্রাঙ্গণে মেলা, ডাক টিকেট অবমুক্তকরণ ও হ্যাকাথন প্রতিযোগিতার আয়োজন রয়েছে। বিটিআরসি ভবন নানা ব্যানার ও ফেস্টুনে সেজেছে। দিনব্যাপী আয়োজনে রয়েছে মেলার আয়োজনও।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিটিআরসি এরই মধ্যে ই-লাইসেন্সিং সেবা চালু করেছে। অনুষ্ঠানে একটি ন্যাশন ওয়াইড আইএসপি ও অপর এক ডিভিশনাল আইএসপির হাতে ই-লাইসেন্স তুলে দেওয়া হয়। বেশ কিছু ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, বিটিআরসি চেয়ারম্যান (অব.) মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।