সোমবার ঢাকায় আওয়ামী শাসনের কুখ্যাত ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার সংগঠন আরএফকে সেন্টারের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি। এ সময় আট বছর গুমের যন্ত্রণা বর্ণনা করতে গিয়ে কেঁদেছেন সেখানে বিনা বিচারে আটক থাকা মীর আহমদ বিন কাসেম।

সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে থাকা সেই ঘরেই কেঁদে ফেলেন মীর আহমদ, যেখানে তিনি প্রায় আট বছর গোপনে আটক ছিলেন। এসময় তাকে জড়িয়ে সান্ত্বনা দেন কেরি।

এই আয়নাঘরটি সেই গোপন বন্দিশালা, যেখানে বাংলাদেশে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দীর্ঘ দমন-পীড়নের সময় অসংখ্য গুম হওয়া ব্যক্তিকে আটক রাখা হতো।

497507492_30475460072044831_2288667587571133510_n.jpg১

কেরি কেনেডি—রবার্ট এফ কেনেডির কন্যা এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাতিজি—গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তার নেতৃত্বেই আন্তর্জাতিক মহলে শেখ হাসিনার শাসনামলের ‘গুম’, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ ও ‘রাজনৈতিক নিপীড়ন’ নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠেছে।

ফেসবুকে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই ছবি ও ঘটনাটি পোস্ট করেন।

তিনি লিখেছেন, ‘কেরি কেনেডির সঙ্গে যখন মীর আহমদ বিন কাসেমের দেখা হয় সেই আয়নাঘরে, যেখানে তিনি কাটিয়েছেন বন্দিত্ব ও অন্ধকারে আটটি বছর। মঙ্গলবার ‘আয়নাঘরের’ বিভীষিকাময় দিনগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মীর আহমদ। আবেগাপ্লুত কেরি কেনেডি তাকে সান্ত্বনা দেন।

শফিকুল আলম আরও লেখেন, ‘রবার্ট কেনেডির কন্যা ও জন এফ কেনেডির ভাতিজি কেরি কেনেডি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন আরএফকে সেন্টারের প্রধান। বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের দুঃশাসন ও ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সোচ্চার ছিলেন তিনি। কেরি কেনেডির এই সক্রিয়তা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ, যার ফলে যুক্তরাজ্যে প্রশিক্ষিত এই ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম আয়নাঘরের মতো ভয়ংকর বন্দিশালায় জীবিত থাকতে পেরেছিলেন।’

497519698_30475459368711568_1367791401630024350_n

‘আয়নাঘর’ শেখ হাসিনার শাসনামলে পরিচালিত গোপন বন্দিশালাগুলোর একটি কুখ্যাত উদাহরণ, যেখানে বিরোধী মতালম্বীদের বছরের পর বছর গোপনে আটকে রাখা হতো। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এটি তার শাসনামলে ব্যাপকভাবে আলোচিত গুম, নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক ভয়াবহ সাক্ষী।