স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, চীনের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যখনই বাংলাদেশ কোনো সমস্যা বা দুর্যোগের মুখোমুখি হয়, তখন চীন আমাদের দীর্ঘস্থায়ী বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে সেই সমস্যাগুলি কাটিয়ে ওঠার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি, মাইলস্টোন কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনার পর চীন আমাদের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য তাৎক্ষণিক চিকিৎসক দল পাঠিয়েছে। গত বছর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় চীন এগিয়ে এসেছিল। শুধু তাই নয়, চীন সরকারের অনুদানের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল নির্মাণ, সরঞ্জাম সরবরাহ এবং ডাক্তার, নার্স এবং টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়াও, জুলাই যোদ্ধাদের জন্য একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপনের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। চীনের জনগণের এই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং কল্যাণকর উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশ চীনের জনগণ এবং সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে অনেকেই চোখ হারিয়েছে, হাত হারিয়েছে, পঙ্গু হয়েছে। চীন আমাদের রোবোটিক হাত-পা দিয়েছে যা আহতদের জীবনে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে।

উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার বাস্তবায়ন, বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করা, নিয়ন্ত্রক কাঠামো সহজীকরণ এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অবিচল রয়েছে। চীনা মেডিসিন ইকুইপমেন্ট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আজ রাজধানীর বনানীতে হোটেল সারিনায় ‘নি হাও চীন-বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উন্নয়ন প্রদর্শনী’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক স্বাস্থ্যসেবার সহযোগিতার আরেকটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। বেল্ট অ্যান্ড রোড হেলথকেয়ার সেন্টার দিনব্যাপী এই এক্সপোর আয়োজন করেছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এছাড়াও স্বাস্থ্য প্রশাসনের প্রতিনিধি, চিকিৎসা বিশেষজ্ঞসহ রোগী ও সাধারণ দর্শনার্থীরা।

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি ও উচ্চমানের হাসপাতাল পরিষেবায় বিশ্বজুড়ে পরিচিত। আমরা বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে একটি টেকসই স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই।

স্বাস্থ্য বিষয়ক এই প্রদর্শনীতে চীনের ১০টিরও বেশি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল অংশ নিয়েছে। তারা বাংলাদেশি রোগীদের জন্য উন্নত চিকিৎসা সহজলভ্য করতে অন-সাইট ও অনলাইন কনসালটেশন, ভিসা ইনভাইটেশন লেটার ও প্রসেসিং, অনুবাদক সেবা এবং বিমানবন্দর পিকআপ সুবিধাসহ বিভিন্ন সহায়তার কথা তুলে ধরে।