আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনের সময় ঘোষণার পর ভোটারের মনস্থির করার কথা। কিন্তু সেই ভোটারদের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে সংশয় রয়ে গেছে। অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের ঘোষণা ইতিবাচক হলেও মাঠের রাজনীতিতে নির্বাচন ঘিরে সংশয় এখনো কাটেনি। তারা বলছেন, জুলাই ঘোষণাপত্র, সংস্কারপ্রক্রিয়া ও জুলাই হত্যাকা-ের বিচার, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঘিরে নির্বাচন নিয়েও সংশয় বাড়ছে। যার ফলাফল দেখা গেছে সম্প্রতি ব্র্যাক আয়োজিত এক জরিপে। সেখানে দেখা গেছে, ৪৮ শতাংশের বেশি ভোটার নির্বাচন নিয়ে এখনো ভাবছেন না। সরকারের নির্বাচনের আশ্বাসেও সত্যিকারভাবে আশ্বস্ত হতে পারছে না জনগণ।
সূত্র মতে, কবে ভোট সম্পন্ন হবে এ নিয়ে যখন সর্বত্র গুঞ্জনের ডালপালা মেলছে, তখন চলতি মাসের ১২ আগস্ট রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে জাতীয় যুব সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর দেয়া একটি বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গণে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন হবে না। যখন তিনি এ বক্তব্যটি দিচ্ছিলেন তখন সমস্বরে হ্যাঁ সূচক জবাব দেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যদলের নেতারা একে অপরের তাকাচ্ছিলেন। পাটোয়ারি তার বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বলেন, যদি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয়, আমার যে ভাইয়েরা শহীদ হয়েছিল, রক্ত দিয়েছিল সংস্কারের জন্য, তাহলে কবরে গিয়ে তার লাশটা ফেরত দিতে হবে এই সরকারকে। আমার যে ভাইয়ের হাতটা চলে গিয়েছিল, যদি সংস্কার কাজ শেষ না করে নির্বাচন হয়, তাহলে এই সরকারকে আমার ভাইয়ের হাতটা ফিরিয়ে দিতে হবে। মায়ের বুক খালি হয়েছিল, ওই মায়ের বুকের সন্তানকে ফেরত দিতে হবে।
সূত্র মতে, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বছর রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেছে। নির্বাচন কমিশনও ফেব্রুয়ারিতে ভোট করতে এর দুই মাস আগে সূচি ঘোষণার কথা বলেছে। তারা বলছে, এর আগে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপে বসবে। নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দলের বক্তব্য তারা শুনবেন। এরপর ডিসেম্বরের দিকে তারা নির্বাচনের রোডম্যাপ জানাবেন। সরকার ও ইসির বক্তব্যে দ্রুত নির্বাচনের দাবি করে আসা বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দল স্বাগত জানালেও সংস্কার ও অভ্যুত্থান ঠেকানোর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার বিচার না হওয়ার আগে নির্বাচনের বিরোধিতা করে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি। অভ্যুত্থানের নেতাদের নিয়ে গঠিত দলটি নির্বাচনের আগে এ দুই দাবির বাস্তবায়ন চেয়ে আসছে। যুব সম্মেলনে এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন আবারও নির্বাচনের আগে রাষ্ট্র সংস্কার ও অভ্যুত্থানের সময়কার ঘটনায় বিচারের কথা বলেন। তিনি বলেছেন, একই ধরনের সংস্কৃতিতে নির্বাচন হলে মানুষ কেন আহত-নিহত হল সে প্রশ্ন আবারও দেখা দিবে। তিনি বলেন, একই সংস্কৃতির ডামাডোলে, একই ফ্যাসিবাদী সংবিধানে, একই সিস্টেমের মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। তাহলে এতগুলো মানুষ শহীদ হবার প্রয়োজন কি ছিল? এতগুলো মানুষ আহত হবার প্রয়োজন কি ছিল?
সূত্র মতে, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পরও নির্বাচনের সময়সীমার বিতর্কটি শেষ হয়েছে বলে মনে হয় না। তিনি যেদিন মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে জানিয়ে দিলেন নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে আমরা প্রস্তুত, নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করে দিয়েছি, সেদিনই ঢাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না।’ জানা গেছে, এনসিপি নেতার এ বক্তব্যটি একান্তই তার নিজের নয়। যেহেতু বক্তব্যের বেশ কয়েকদিন পার হলেও এটি নিয়ে দল কিছু বলে নি, তাই ধরে নিতে হবে এটি দলেরই বক্তব্য।
অন্যদিকে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বেশ কিছু ইসলামী ও বাম দল দল আনুপাতিক ভোটের (পিআর) দাবি জানিয়ে আসছে। তারা বলছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে পিআর পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। যেটি নির্বাচিত সংসদ ছাড়া সম্ভব নয়। এটি কার্যকর হলেও আগামী নির্বাচনে করতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের ঘোষণা ইতিবাচক হলেও মাঠের রাজনীতিতে নির্বাচন ঘিরে সংশয় এখনো কাটেনি বলেই মনে করে অনেক দল। তারা বলছেন, বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন কঠিন হবে। ফলে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। দলগুলো বলছে, যেভাবে সারাদেশে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, কেন্দ্র দখলের হুমকি ধামকি চলছে, তাতে নির্বাচন কোনোভাবেই সুষ্ঠু হবে না। যদি প্রয়োজনীয় সংষ্কার শেষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে কেন্দ্র দখল, কালো টাকার ছড়াছড়ি অনেকাংশে কমে যাবে।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে তারা ছাড় দিলেও জুলাই সনদে ছাড় দেবেন না। জুলাই সনদ, বিচার ও নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে সংশয় এখনো কাটেনি। তিনি বলেন, গত এক বছর ছাড় দিয়েছি। জুলাই ঘোষণাপত্রে ছাড় দিয়েছি। জুলাই সনদে কোনো ছাড় হবে না। এক পার্সেন্ট ছাড়ও জুলাই সনদে দেওয়া হবে না। নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা বলতে চাই, সমীকরণ এখনো শেষ হয়ে যায় নাই। ফলে যারা এখনই সমীকরণ মিলিয়ে ফেলছে, তারা ভুল পথে হাঁটছে। গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি এখনো রাজপথে আছে। আমরা নির্বাচন চাই। নির্বাচন, ভোটাধিকারের জন্য আমাদের লড়াই ছিল। কিন্তু আমরা এও বলেছি, পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে যেতে হবে।
এদিকে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলা হলেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে শংকা খোদ নির্বাচন কমিশনের। সম্প্রতি রংপুর অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশন এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এ চ্যালেঞ্জ এককভাবে ইসির পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এটি করতে হবে ইসি, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মিলিতভাবে।
ফেব্রুয়াতিতে নির্বাচন নিয়ে জনগণেরও তেমন উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ‘পালস সার্ভে ৩’-এর ফলাফলে দেখা যায়, ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ মানুষ বলছেন, কাকে ভোট দেবেন, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তারা। এছাড়া আগামী বছরের মাঝামাঝি অথবা শেষের দিকে নির্বাচন চান ৫০ শতাংশের বেশি ভোটার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচনের দিন-তারিখ কাছাকাছি ভোটারের মনস্থির করার কথা। কিন্তু সেই ভোটারদের মধ্যেও নির্বাচনের বিষয়ে সংশয় রয়ে গেছে। অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের ঘোষণা ইতিবাচক হলেও মাঠের রাজনীতিতে নির্বাচন ঘিরে সংশয় এখনো কাটেনি বলেই মনে করে অনেক দল। তারা বলছেন, বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন কঠিন হবে। নির্বাচনের ঘোষণাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু জুলাই ঘোষণাপত্র, সংস্কারপ্রক্রিয়া ও জুলাই হত্যাকা-ের বিচার ঘিরে মতভেদ রয়েছে অধিকাংশ দলের মধ্যে। এ ছাড়া নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়েও রয়েছে সংশয়।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ইলেকশন যদি ফেয়ার না হয়, পার্টিসিপেটরি (অংশগ্রহণমূলক) না হয়, লোকেরা যদি স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে না পারে, তাহলে তো এই নির্বাচন আবারও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেন, নির্বাচনকালে ল অ্যান্ড অর্ডারের ইস্যুটা নিয়ে সংশয় আছে। ভোটাররা আশ^স্ত হতে পারছেন না। সরকার ও ইসির দায়িত্ব হচ্ছে, ভোটারদের আস্থায় আনা।
প্রতিদিনই বাংলাদেশে রাজনৈতিক চিত্র-চরিত্র পরিবর্তিত হচ্ছে। চলছে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে নানা ধরনের কাটাছেঁড়া। তবে সবার মৌলিক প্রশ্ন- নির্বাচন আদৌ হবে কিনা, হলে কেমন হবে? নির্বাচন কি ইনক্লুসিভ হবে? ভোটাররা কি নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন? সবকিছু মিলে নির্বাচন নিয়ে চলছে এক ধরনের বিশ্বাস-অবিশ্বাস, সংশয়-সন্দেহের নানা অনুষঙ্গ। তাই সরকারের নির্বাচনের আশ্বাসেও সত্যিকারভাবে আশ্বস্ত হতে পারছে না জনগণ। নির্বাচন আসলেই হবে কিনা সেই বিষয়ে কিছুটা সংশয় তো থাকছেই।
সূত্র মতে, বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং নিরাপদে ভোট দেওয়ার পরিবেশের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি নির্বাচন চায়। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর সেটি আর বাংলাদেশে হয়নি। পরবর্তী তিনটি নির্বাচনই একতরফা হয়েছে, যেখানে জনগণ ভোট প্রদানের মতো নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই হয়তো এবারের নির্বাচন নিয়ে তাদের আগ্রহ বেশি ছিল। কিন্তু এবারের ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনেও তাদের সেই আকাংখার বাস্তবায়ন ঘটবে না বলেই অনেকে মনে করছেন। সবকিছু যদি আগের মতোই চলবে তা হলে সংস্কারের ঢোল এত জোরে বাজল কেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাংলাদেশে বর্তমানে যে ধরনের অবস্থা বিরাজ করছে তাতে একটি নির্বাচন অবশ্যই দরকার। তবে নির্বাচনটি হতে হবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। এর বাইরে ভাবার অবকাশও খুবই সীমিত। তাই জনগণের আস্থা কাটানোর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করাই হতে পারে সরকারের প্রধান কাজ। সবকিছুর বাইরে গিয়ে সরকারকে এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতেই হবে। মানে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতেই হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা। ‘জুলাই সনদ’-এর মতো বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলে নির্বাচনের সময় সহিংসতা ও অনিশ্চয়তা বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এই অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে অশুভ শক্তি ফায়দা নিতে পারে, যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও দুর্বল করবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাও ইসির জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ। প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে একটি বড় বাধা। যদি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করে, তাহলে শুধু ইসি এককভাবে একটি অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে না। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাই সরকার ও ইসিকে আরও সক্রিয় এবং কৌশলী হতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বললেও প্রকৃত অর্থ সহসাই ধোঁয়াশা কাটছে না।