বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত এমপিও শিক্ষকরা দাবি পূরণে অন্তর্বর্তী সরকারকে এক মাসের আলটিমেটাম দিয়েছেন।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে ‘দৃশ্যমান ও যৌক্তিক’ পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সমাবেশস্থলে এ ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের নেতারা।
জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজীজী বলেন, ‘আমাদের দাবি যৌক্তিক, এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও স্বীকার করেছেন। কিন্তু তারা যৌক্তিক দাবি পূরণে গড়িমসি করছেন। আমরা দাবি আদায়ে ৩০ দিন সময় বেঁধে দিচ্ছি। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে সর্বাত্মক আন্দোলনে যাবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী সেই সর্বাত্মক কর্মসূচি হবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, তথা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি। ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি না মানলে ১৫ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি করা হবে।’
এর আগে, দুপুর দেড়টার দিকে সমাবেশস্থল থেকে ১০ জন শিক্ষক নেতা সচিবালয়ে যান। তারা শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের জানানো হয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সার্বজনীন বদলি নিয়ে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে সভায় বসেই এ কমিটি করার ঘোষণা দেন উপদেষ্টা।
সভা সূত্র জানায়, সার্বজনীন বদলি কমিটির সভাপতি করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমানকে। সদস্যসচিব করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব (মাধ্যমিক-২) সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলীকে। এছাড়া সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে সদস্য রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বাড়ি ভাড়া টাকা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য বিষয়গুলো কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। শিক্ষকদের দাবি-দাওয়াগুলো যৌক্তিক উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা তা ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
এর আগে বুধবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মহাসমাবেশ শুরু করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। দেশের ৬৪ জেলার কয়েক হাজার শিক্ষক এতে অংশ নেন। শিক্ষকদের সমাবেশের কারণে পল্টন থেকে হাইকোর্ট ও শাহবাগ অভিমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে সমাবেশ শেষে দুপুর ২টার দিকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা করার কথা থাকলেও তা করেননি শিক্ষকরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ ও উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ হওয়ায় শিক্ষকরা সমাবেশ শেষ করে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেন।