ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ মাস পর বুধবার (৭ মে) দিবাগত রাত ৩টার পর থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিষয়টি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এই অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের দায় দেখছেন অনেকেই। অনেকে দোষারোপ করছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের ভূমিকা নিয়ে। কেউ কেউ এটাও বলছেন, এতদিনেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা তার। যা নিয়েই এবার নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন আইন উপদেষ্টা।

বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ড. আসিফ নজরুল লিখেন, আমার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ জঘন্য মিথ্যোচার ও আক্রমণাত্নক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে। আমি আপনাদের সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই খুনের মামলার আসামী সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনে বাধা দেয়ার দায়িত্ব পুলিশ ও গোয়েন্দা এজেন্সীগুলোর, যা কোনভাবেই আমার আইন মন্ত্রনালয়ের এখতিয়ারভূক্ত বিষয় নয়।

আমার মন্ত্রনালয়ের অধীনে আছেন নিম্ন আদালতের বিচারকরা। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, আদালতের বিচারকদের দায়িত্ব বিমানবন্দর পাহাড়া দেয়া না বা কারো চলাচলে বাধা দেয়া না।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরনের সুযোগ রাখার লক্ষ্যে আইসিটি আইনে সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার বিধান আইন মন্ত্রনালয়ের খসড়ায় ছিল। আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমি নিজে এটা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করেছি। আমার উত্থাপিত খসড়ার আমিই বিরোধিতা করবো এটা কিভাবে সম্ভব? উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কোন উপদেষ্টা কি ভূমিকা রেখেছেন এনিয়ে আমাকে, ছাত্র উপদেষ্টাদের বা অন্য কাউকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকুন। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হয় তার দায় দায়িত্ব আমাদের প্রতিটি উপদেষ্টার। আমাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের প্রশ্নে কোন দ্বিমত নেই। তবে পদ্ধতি নিয়ে সবার নিজস্ব মত থাকতেই পারে।

আমাদের এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে, আইসিটি আইন চাইলেই আমরা কয়েকদিনের মধ্যে সংশোধন করতে পারবো। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য সন্ত্রাস দমন আইন সহ অন্য আইনগুলোও আছে। কাজেই আইন কোন সমস্যা না। রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ চাইলে বা বিচারিক আদালত এ সম্পর্কে কোন পর্যবেক্ষন বা রায় আসলে অবশ্যই আইনানুগভাবে দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে।

আমরা সেই প্রত্যাশায় আছি। ইনশাল্লাহ্।