ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই ধরনের পরিস্থিতি ইতোমধ্যে নাজুক একটি অঞ্চলের স্থিতিশীলতা আরো বিঘিœত করার ঝুঁকি তৈরি করে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ। এদিকে মুখপাত্র ইরান থেকে বাংলাদেশী নাগরিকদের আগামী সপ্তাহে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাহ আসিফ রহমান। তিনি বলেন, ইরানের পার্শ্ববর্তী দেশ হয়ে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। গতকাল রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে শাহ আসিফ রহমান এ তথ্য জানান।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ইরান থেকে বাংলাদেশীদের ফিরতে হলে তেহরান দূতাবাসের হটলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। ইরান থেকে প্রথম দফায় কত লোক ফিরবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় ১০০ জন হতে পারে। যারা ফিরতে আগ্রহী তাদের এই নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস, তেহরান- হটলাইন নম্বর: +৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮, +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা- হটলাইন নম্বর: +৮৮০১৭১২০১২৮৪৭।
কূটনীতিক ওয়ালিদ তেহরানে পৌঁছেছেন: ইরান-ইসরাইল সংঘাত শুরুর আগে দেশে ছুটি কাটাতে ঢাকায় এসেছিলেন তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারি ওয়ালিদ ইসলাম। ইরানে সংঘাত শুরু হলে ছুটি বাতিল করে সম্প্রতি তেহরানের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ওয়ালিদ। তবে তেহরান পর্যন্ত পৌঁছাতে তার বেশ বেগ পেতে হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি তেহরানে যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ওয়ালিদ। তিনি তুরস্ক হয়ে তেহরান যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়। পরে এই কূটনীতিক তুর্কমেনিস্তান হয়েও তেহরান প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। তারপর অবশ্য তুর্কি সরকারের অনুমতি পেয়ে সীমান্ত দিয়ে তেহরান পৌঁছেছেন ওয়ালিদ।
এখনই দেশে ফিরতে চান না শিক্ষার্থীরা: ২০০’র মতো শিক্ষার্থী ইরানের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন। তাদের মধ্যে তেহরানে রয়েছেন ১০ থেকে ১২ জন। ইরান-ইসরাইলের চলমান সংঘাতের শুরুর দিকে বাংলাদেশি এসব শিক্ষার্থীরা দেশে ফেরার বিষয়ে বেশ আগ্রহী ছিল। তবে এখন এসে তারা ভিন্ন কথা বলছেন। তারা পরিস্থিতি আরেকটু পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে চান। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, শিক্ষার্থীরা প্রথমে আগ্রহ দেখালেও এখন তারা দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ। যার জন্য আর আরেকটু সময় নিতে চান। কেননা, দেশে ফেরত এলে পরে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও যাওয়া কঠিন হয়।