স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুরঃ

"পুলিশের কেউ যদি মামলা বাণিজ্যে বা দুর্নীতিতে জড়িত হয়, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না"—সাফ জানিয়ে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবঃ)। তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত ৩০-৪০ জনকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। যদি আরও ৩০-৪০ জনকে পাঠাতে হয়, আমি এতটুকুও কুণ্ঠিত হব না।

মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে গাজীপুর মহানগরের গাছা থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দুর্নীতি। এটা আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। যদি একে নিয়ন্ত্রণে আনা যেত, তাহলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যেত। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুধু প্রশাসনের নয়—এটা সমাজের সকল শ্রেণির দায়িত্ব। এজন্য আমি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই। আপনারা সত্য লিখলে, জনগণ সচেতন হবে, অনেক কিছু ঠিক হয়ে যাবে।

পুলিশ বাহিনীর সংস্কার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আগে অভিযোগ ছিল—পুলিশ জিডি বা মামলা নিতে চায় না। এখন আমরা অনলাইনে মামলা গ্রহণের ব্যবস্থা চালু করেছি। ঘরে বসেই জিডি করা যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষকে থানায় গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে না।

রিমান্ডের নামে নির্যাতনের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “এখন থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাঁচঘেরা কক্ষ তৈরি করা হবে, যেখানে অন্যরা পর্যেবক্ষণ করতে পারবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে খারাপ আচরণ হচ্ছে কিনা। এতে পুলিশের জবাবদিহিতা বাড়বে।

৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনাসমূহের মামলার তদন্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখন আর পুলিশ নিজেরা গিয়ে অসংখ্য অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে মামলা করছে না। বরং সাংবাদিক, নাগরিক সমাজ ও ভুক্তভোগীরাই ১০-১৫ জনের নাম দিয়ে ২০০-২৫০ জন ‘বেনামী লোককে যুক্ত করছেন, যার ফলে তদন্তে সময় লাগছে। এসব মামলায় যেমন প্রকৃত অপরাধী আছে, তেমনি নির্দোষ মানুষও আছে। আমরা দেখবো, যাতে নির্দোষ কেউ সাজা না পায়—সেই নিশ্চয়তা দেওয়া যায়।

উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর, কিন্তু নির্দোষ কাউকে শাস্তি দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। ন্যায়বিচারের জন্য আমরা দায়বদ্ধ।