বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে। তাঁর মতে, এই উদ্যোগ উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে সংস্থাটির সদর দপ্তরে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।
তোবগে বলেন, ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গেলেপু মাইন্ডফুলনেস সিটি (জিএমসি) এবং কুড়িগ্রামে ভুটানি বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দকৃত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত করা গেলে উভয় দেশই ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ভুটানের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ ও ভুটান উন্নত যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে পারে।” তিনি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সব সুযোগ অনুসন্ধানের আহ্বান জানান।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় পর্যটন প্রসারের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ভুটান সফর পর্যটন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়া তোবগে জানান, ভুটান তাদের জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা বাংলাদেশের জন্য কাজে লাগাতে চায়। পাশাপাশি ভুটানের ওষুধশিল্পে বাংলাদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হবে এবং ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করা হবে।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে তাঁর দেশ অংশ নেবে।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে তোবগে বলেন, বাংলাদেশ এখন “সঠিক নেতৃত্বে” রয়েছে। তিনি ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. ইউনূসকে সম্বোধন করেন “মাই প্রফেসর” হিসেবে।
এছাড়া তিনি সম্প্রতি থিম্পুতে উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশের নতুন চ্যান্সারি ভবনের নকশারও প্রশংসা করেন, যা “হিমালয়ের পাদদেশে বঙ্গোপসাগর” থিমে নির্মিত হয়েছে।
বৈঠকের শেষে ড. ইউনূস ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তোবগে আমন্ত্রণ গ্রহণ করে জানান, তিনি সম্ভবত আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে এ সফর করবেন।