জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা সোসাইটি এবং সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিস (সিপিএস) যৌথ আয়োজিত "আদর্শ সমাজ ও প্রশাসন পরিচালনায় মরহুম শাহ আব্দুল হান্নান এবং মরহুম এ জেড এম শামসুল আলমের জীবনাদর্শ" শীর্ষক স্মৃতিচারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা সোসাইটি ও সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিস-সিপিএস এর সভাপতি আবদুস শহীদ নাসিম। উদ্ভাবনী বক্তব্য দেন মেজর আবদুস সালাম সরকার (অব.)। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিস (সিপিএস)-এর জেনারেল সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান এবং বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা সোসাইটির সহকারি জেনারেল সেক্রেটারি আরশাদ মঞ্জুর চৌধুরী। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি মেজর আবদুস সালাম সরকার (অব.)।

প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ঢাকার অধ্যাপক ড. শারমিন ইসলাম ও বাংলাদেশ কো-অপরাটেভ বুক সোসাইটি লিঃ-এর প্রকাশনা ম্যানেজার ওয়াসিম আকরাম।

সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর মাহবুব আহমদ, প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান (সাবেক অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি), মোঃ আবদুল মান্নান (চেয়ারম্যান, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি ও সাবেক এমডি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ), প্রফেসর ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া (অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), ড. আবু সাইদ এম আহমেদ (প্রফেসর এবং ডিন, ইউনিভারসিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক), ড. নাসিমা হাসান, ড. মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, প্রফেসর ডা. আবু খলদুন আল মাহমুদ, জনাব শহিদুল ইসলাম (সভাপতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন)।

প্রফেসর মাহবুব আহমদ বলেন, “মরহুমদ্বয় শুধু সৎ, যোগ্য ও নিবেদিতপ্রাণ প্রশাসনিক কর্মকর্তাই ছিলেন না বরং রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রেই তারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ইসলামী অর্থনীতি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। তারা উভয়েই খ্যাতিমান লেখক ছিলেন। তারা তাদের পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে আগামীতে সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে মূল্যবান দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। মরহুমদ্বয়ের রচনাবলী দেশ ও জাতির জন্য এক মহামূল্যবান সম্পদ। মূলত, তাদের দিকনির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে পারলেই সুখী, সস্মৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। তিনি দেশ ও জাতির জন্য মরহুমদ্বয়ের অবদান স্বীকৃতি তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।”

চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, “মরহুম শাহ আবদুল হান্নান ও মরহুম শামসুল আলমের মত ব্যক্তিত্বরা সবসময় জন্মান না বরং এজন্য শতাব্দীর পর শতাব্দী অপেক্ষা করতে হয়। তারা তাদের কর্মজীবনে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন এবং নিরবে-নিভৃত্বে মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। তারা আমাদের জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবেন যুগ থেকে যুগান্তরে। তিনি মরহুমদ্বয়ের অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করতে নতুন প্রজন্মকে শপথ গ্রহণের আহবান জানান।”

ড. শারমিন ইসলাম তার প্রবন্ধে বলেন, “এক শ্রেণীর মানুষ আছেন যারা তাঁদের সময়ের তুলনায় অনেক বেশি অগ্রসর এবং সমাজের যা কিছু অসংগতি আছে তা তাঁদেরকে নাড়া দেয় প্রবলভাবে। মানুষের ক্লান্ত, অবদমিত আত্মচেতনাকে আলোকষ্পর্শে জাগিয়ে তোলাই যেন তাঁদের জীবনের মুল উদ্দেশ্য। মরহুম শাহ আব্দুল হান্নান এমনই একজন ব্যক্তি, এমনি এক বিরল প্রতিভা যা কোন জাতি শতাব্দীতে একটা দু’টো পায় বলে আমার মনে হয়।”

প্রবন্ধে ওয়াসিম আকরাম বলেন, “ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বলেছিলেন, ‘আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও আমি একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিব’। আর আমি বলবো, ‘আমাকে একজন সৎ মানুষ দাও আমি একটি আদর্শ সমাজ উপহার দিব’। আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠায় এমনই একজন সৎ, নীতিবান ও আদর্শিক মানুষ ছিলেন এ জেড এম শামসুল আলম। যিনি একাধারে বাংলাদেশ সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, লেখক, গবেষক, প্রকাশক, ইসলামী চিন্তাবিদ, সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তক সহ পরিপূর্ণ একজন ধর্মভীরু ও আধ্যাত্বিক মানুষ ছিলেন। জীবনভর সুন্দরের সাধনা করেছেন।”