ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের রাতভর নির্মম নির্যাতনে শহীদ হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। তাঁর স্মরণে শাহাদাতের প্রথম বার্ষিকীতে ‘আবার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’-এর ব্যানারে ২০২০ সালে রাজধানীর পলাশী মোড়ে ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ নির্মাণ করেছিলো আখতার হোসেনের নেতৃত্বে একদল তরুণ। কিন্তু তা গুড়িয়ে দিয়েছিল পতিত শেখ হাসিনার প্রশাসন।

২০২৪ সালের গনঅভ্যুত্থানের পর সেখানে স্তম্ভটি পুনর্নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর এখন চলছে নির্মাণকাজ। যা হচ্ছে সরকারি অর্থায়নেই।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পলাশী মোড়ে শহীদ আবরার ফাহাদের স্মরণে ৮ ফলকবিশিষ্ট স্তম্ভের পুনর্নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

আজ ফেসবুকে ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ পরিদর্শনের ছবি শেয়ার করে আখতার হোসেন লিখেছেন, শহীদ আবরার ফাহাদ স্মরণে ঢাবি-বুয়েট সংলগ্ন পলাশীর মোড়ে ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ নির্মাণের কাজ চলছে। আবরার ফাহাদ আমাদের অনুপ্রেরণা।

akhter_QqiJOyF.width-800.webp১

আবরার ফাহাদের শাহাদাতের প্রথম বার্ষিকীতে আমরা কিছু তরুণ মধ্য রাতে পলাশীর মোড়ে একত্রিত হয়েছিলাম। সমস্ত ভয়কে পাশ কাটিয়ে আমরা নির্মাণ করেছিলাম আগ্রাসনবিরোধী আটস্তম্ভ। সেদিন আমরা আমাদের শপথে জয়ী হতে পেরেছিলাম।

তিনি আরও বলেছেন, স্বৈরাচার হাসিনা প্রশাসন আট স্তম্ভের কাঠামোকে স্থায়ী হতে দেয়নি। তারা প্রথম দিনই ভেকু মেশিন দিয়ে আটস্তম্ভকে ভেঙে ফেলে। প্রতিবাদে আমরা বাঁশ দিয়ে আট স্তম্ভ নির্মাণ করি। সেটাও তারা ভেঙে ফেলে। আমরা শপথ নিয়েছিলাম আট স্তম্ভের বার্তা সারাদেশে ছড়িয়ে দেবার। ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে দিয়ে সে সুযোগ এসেছে।

এবার সরকারি উদ্যোগেই নির্মিত হচ্ছে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই উদ্যোগকে বাস্তবে রুপ দিডে মহতী ভুমিকা পালন করেছেন। আট স্তম্ভ অবশেষে দৃশ্যমান হতে চলেছে। আগ্রাসনবিরোধী জনতার বিজয় হবেই ইনশা আল্লাহ।

সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, গণপ্রতিরক্ষা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা, দেশীয় শিল্প-কৃষি ও নদী-বন-বন্দর রক্ষা, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা এবং মানবিক মর্যাদা—এই আটটি বিষয়ের প্রতীক হিসেবে আটটি স্তম্ভ বানানো হয়েছিল। ২০২৪ সালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ পুনর্নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ অন্যরা।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।