আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে হজ্ব সেবাদানকারী কোম্পানির সঙ্গে সব চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। কোনো অবস্থায়ই সময় আর বাড়ানো হবে না। চুক্তি সম্পন্ন করতে আর মাত্র চারদিন বাকি থাকলেও নিবন্ধন করা প্রায় অর্ধেক হজ্বযাত্রীর চুক্তি এখনো সম্পন্ন হয়নি। আর এজেন্সির অবহেলা বা গাফলতির কারণে কোনো হজ্বযাত্রী হজ্ব করতে না পারলে সে দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে। এ দায় কোনোভাবেই সৌদি সরকার কিংবা ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বহন করবে না।

গতকাল সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

তিনি বলেন, হজের জন্য ৮৭ হাজার ১০০ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন।

উপদেষ্টা বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের সব চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা নিবন্ধন করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে অনেক এজেন্সিকে চুক্তি সম্পন্ন করতে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। কোনো পরিস্থিতিতে চুক্তি সম্পন্ন করার সময় বাড়ানো হবে না। যদি কারও চুক্তি সম্পন্ন না হয় তার দায় সৌদি সরকার নেবে না, বাংলাদেশ সরকারও নেবে না। সব দায় এজেন্সিকে নিতে হবে।

এখন পর্যন্ত কতজনের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় সবার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৫ হাজার হজ্বযাত্রীর চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।

এর আগে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বেসরকারি এজেন্সিগুলোও তাদের অধীনে নিবন্ধিত হজ¦যাত্রীদের জন্য সৌদি সরকারের গাইডলাইন অনুসারে কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকের কার্যক্রম বেশ সন্তোষজনক, আবার অনেকে ধীর গতিতে চলছেন। সৌদি সরকারের পক্ষ হতে হজ্ব সেবাদানকারী কোম্পানির সঙ্গে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব চুক্তি সম্পাদনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং এই ডেডলাইনের মধ্যে সব চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য তাগিদ দিচ্ছেন তারা।

তিনি বলেন, সৌদি হজ্ব ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে শনিবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাঠানো হয়, যেখানে বলা হয়েছে চুক্তি সম্পাদনের গতি খুবই শ্লথ এবং অনেকক্ষেত্রে তেমন কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ডেডলাইন ১৪ ফেব্রুয়ারি এবং এটা কোনভাবেই বাড়ানো হবে না। বাংলাদেশ হতে হজের জন্য নিবন্ধিত কোন ভাই বা বোন যাতে হজ¦ব্রত পালন করা হতে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন।

সৌদি সরকারের বেঁধে দেওয়া সময় ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কী কী চুক্তি করতে হবে সে তথ্য জানান উপদেষ্টা। এর মধ্যে রয়েছে- মিনায় ও আরাফায় তাঁবু ও ক্যাটারিংয়ের জন্য সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি। বাড়ি/হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি। পরিবহন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি। ক্যাটারিং নিতে আগ্রহী হলে ক্যাটারিং সেবাদানকারী কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এজেন্সির অবহেলা বা গাফলতির কারণে কোনো হজ্বযাত্রী হজ্ব করতে না পারলে সে দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে। এ দায় কোনোভাবেই সৌদি সরকার কিংবা ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বহন করবে না।

এজেন্সির অবহেলায় কোনো হজ¦যাত্রী হজ¦ করতে না পারলে এজেন্সির বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল তো হবেই। আর্থিক জরিমানাও করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, হজ্ব প্যাকেজ-১ এর হজ্বযাত্রীরা মিনায় জোন-৫ এর তাঁবুতে অবস্থান করবেন এবং হজ্ব প্যাকেজ-২ এর হজ্বযাত্রীরা মিনায় জোন-২ এর তাঁবুতে অবস্থান করবেন এবং সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক সেখানে খাবারসহ অন্যান্য সুবিধাদি পাবেন।

তিনি বলেন, হজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেবা বিশেষ করে পরিবহন সেবা, ল্যাগেজ লোডিং-আনলোডিংসহ অন্যান্য সেবার জন্য সৌদি সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ইতোমধ্যে সব চুক্তি সম্পাদন করেছি। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে বিশ্বস্ত হজ¦ সেবাপ্রদানকারী কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করেছি। আশা করি, এ বছর হাজিরা সন্তোষজনক সেবা পাবেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে সৌদি সরকারের চাহিদামাফিক হজ¦যাত্রী প্রতি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯১ টাকা হিসেবে ১ হাজার ২৮৫ কোটি টাকার সমপরিমাণ সৌদি রিয়াল পাঠানো হয়েছে।