দক্ষিণ এশিয়ার জন্য নবনিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করা হয়েছে।
সাক্ষাতে জোহানেস জুট বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানান এবং অর্থনৈতিক সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। এ সময় বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের নতুন পরিচালক জিন পেসমে আলোচনায় অংশ নেন এবং তার আগের মেয়াদে (২০১৩-২০১৫) বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা স্মরণ করেন।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, “ভালো কাজের জন্য আপনাকে (ড. ইউনূস) এবং আপনার দুর্দান্ত দলকে ধন্যবাদ জানাই। আপনার নেতৃত্বে আর্থিক খাতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যেভাবে অগ্রগতি হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা বাংলাদেশের জনগণের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভাগ করে নিতে প্রস্তুত।”
তিনি গত বছরের ‘জুলাই বিদ্রোহে’ নিহত শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “সেটি আমাদের সবার জন্য একটি মর্মস্পর্শী সময় ছিল।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখন দেশটা যেন ভূমিকম্প-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ছিল। কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না, কিন্তু সব উন্নয়ন অংশীদার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, যা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।”
তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলনে তরুণরা, বিশেষ করে নারীরা ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। আমরা আজ নারী দিবস পালন করছি তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে।”
বাংলাদেশকে একটি ‘ভৌগোলিক সীমানার চেয়ে বেশি’ বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়ন হলে পুরো দক্ষিণ এশিয়া উপকৃত হবে। তাই আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও সমুদ্র অর্থনীতির দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।”
তিনি জানান, “তরুণদের কারণে বাংলাদেশে এখনও শ্রমশক্তি আছে, যা অনেক দেশের নেই। আমরা বিদেশি শিল্পকারখানাকে আহ্বান জানিয়েছি এখানে আসতে।”
নারীর ক্ষমতায়নে ইউনূসের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, “মেয়েশিশু উপবৃত্তি কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ উদাহরণ তৈরি করেছে, যা অনেক দেশ অনুসরণ করছে। আমরা এই সহায়তা অব্যাহত রাখবো।”
তিনি জানান, গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থায়ন করেছে এবং আগামী তিন বছরেও একই ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফী সিদ্দিকী চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ব্যবস্থাপনা নিয়ে আপডেট দেন।
তিনি জানান, “নতুন ব্যবস্থাপনার ফলে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে উল্লেখযোগ্য হারে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে।”