চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এবং পারস্পরিক সংস্কৃতি ও জ্ঞানের বিনিময় আরও গভীর করতে ঢাকার জাতীয় গ্রন্থাগারে উদ্বোধন করা হলো ‘চায়না বুক কর্ণার’। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে এ উদ্যোগকে, যা সাংস্কৃতিক বিনিময়ের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

চীনা দূতাবাস, চায়না ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনস গ্রুপ এবং বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে রোববার অনুষ্ঠিত হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি ছিলেন বরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক ও মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং চায়না ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট তু চান ইউয়ান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্টেট কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিসের পরিচালক মো কাও ই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ইয়াং হুই, শিক্ষার্থীরা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে ফারুকীর হাতে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং রচিত ‘দেশ প্রশাসন’ বইয়ের প্রথম খণ্ড তুলে দেন তু চান ইউয়ান। পরে তারা নতুন করে প্রতিষ্ঠিত চায়না বুক কর্ণার পরিদর্শন করেন। ফারুকী বলেন, ‘চায়না বুক কর্ণার কেবল একটি বইয়ের সংগ্রহশালা নয়, বরং এটি চীন ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে জ্ঞান, সংস্কৃতি ও বন্ধুত্বের স্থায়ী সেতু রচনা করবে।’ চলচ্চিত্র ও ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলার মাধ্যমে দুই দেশের সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও গভীর করার ওপর তিনি গুরুত্ব দেন।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে সংলাপ ও বোঝাপড়া অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি অতীতের ইতিহাস তুলে ধরে জানান, ফা শিয়ান, অতীশ দীপঙ্কর এবং চেং হ্য-র মত ঐতিহাসিকরা দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
চায়না বুক কর্ণারে প্রাথমিকভাবে সংস্কৃতি, ইতিহাস, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে এক হাজার চীনা বই স্থান পেয়েছে। পাঠকদের সুবিধার্থে থাকছে অনুবাদ ডিভাইস, যা দিয়ে চীনা বই ইংরেজি ও বাংলায় পাঠ করা যাবে। বিশ্বজুড়ে বর্তমানে ১৮টি চায়না বুক কর্ণার চালু রয়েছে।