বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের কবর জিয়ারত করেছেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি আজ বৃহস্পতিবার বাদ ফজর ঢাকার আজিমপুর গোরস্থানে তার কবর জিয়ারত করে দোয়া করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, সহকারী সেক্রেটারি ড. আবদুল মান্নানসহ লালবাগ, চকবাজার সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন থানার আমীর, সেক্রেটারি সহ দায়িত্বশীলবৃন্দ।
গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে আমীরে জামায়াত বলেন, ২৪'র আন্দোলনের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে, ভবিষ্যতে জালিম আর বারবার ফিরে আসবে না। তিনি দলের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা এ টি এম আজহার ন্যায় বিচার পাবেন এবং মুক্ত হয়ে দলের নেতৃত্ব দিবেন বলে আশা করেন। দলের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা যেভাবে অত্যাচারের শিকার হয়েছি সেভাবে অন্য কোনো দলের সাথে হয়নি। জামায়াতের নেতাদের ফাঁসি দিয়ে মারা হয়েছে, জেলে হত্যা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে সুবিচার নিশ্চিতে আইনজীবীদের আব্দুর রাজ্জাকের আদর্শ ধারণ করার পরামর্শ দেন, জামায়াতের আমীর শফিকুর রহমান।

আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক (৪ মে) বিকেলে তিনি ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ ইন্তেকাল করেছেন। ৩ দফা নামাজে জানাযা শেষে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

গত ২১ এপ্রিল ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হন ব্যারিস্টার রাজ্জাক। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ১১ বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন তিনি। এরপর সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন আবারও। ৬ জানুয়ারি তার জুনিয়র আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে তাকে সংবর্ধনাও দেন।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের আইনজীবী ছিলেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক জন্ম ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। বিএ (অনার্স) ও এম এ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯০ সালে তিনি দ্য ল’ কাউন্সেল নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। দুই ছেলেও ব্যারিস্টার এবং সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশা পরিচালনা করছেন।