দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে প্রতিটি নাগরিককে নিজের অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই গণহত্যার বিচার আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষা ও মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং তা রক্ষায় রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা রয়েছে।

তিনি বলেন, বিচারব্যবস্থা কেবল আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, রাষ্ট্রকে নতুনভাবে সাজাতে হলে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যদি অপরাধের বিচার না হয়, তাহলে মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে। সরকার এ বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে বিচার সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে।

দেশ পরিচালনায় গোষ্ঠী বা দলীয় স্বার্থ প্রাধান্য পেলে সাধারণ নাগরিকেরা অনিরাপদ হয়ে পড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এমন এক রাষ্ট্রে বাস করছি, যেখানে কেউ বেঁচে থাকলেও তাকে রক্ষা না করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, পরিবর্তনের জন্য দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে। নাহলে বিচার কেবল আনুষ্ঠানিকতা হয়ে থাকবে এবং অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি ঘটবে। জনগণের সত্যিকারের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে এবং তা সম্মানের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর মতে, এই অবস্থার পরিবর্তন একদিনে সম্ভব নয়, তবে ধীরে ধীরে পরিবর্তনের পথে সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে।

জুলাই মাসের ঘটনাগুলোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে, তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে দেশ ত্যাগ করেছে। এই পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ কীভাবে সৃষ্টি হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এসব বিষয় বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় আনা জরুরি বলে মত দেন উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের। এসময় একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনা ও জুলাই মাসের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন যুগ্ম সচিব রুহুল আমিন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম এবং ‘আমার দেশ’ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।