চীন থেকে ৫ দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। সফর শেষে মঙ্গলবার রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জের গেটে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সাথে চীনের সম্পর্ক শুধু ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’-এর মধ্যেই এখন সীমাবন্ধ নয়, এটা এখন প্রতিবেশী সুলভ সম্পর্কে পরিণত হয়েছে।

WhatsApp Image 2025-07-15 at 21.21.29_69f58c38

আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান বলেন, চীনের গুরুত্বপূর্ণ নগরী সাংহাই সফরে প্রাদেশিক সরকারসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও থিংক ট্যাংকের বৈঠক হয়েছে। তিনি বলেন, সফরটি ছিল মূলত: সেন্ট্রাল কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না-সিপিসি-এর আমন্ত্রণে। সিপিসির লড়াই সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৯২১ সালে তাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম বৈঠকটি ছিল ১৩ জন নিয়ে এই সাংহাইতেই। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য প্রবেশ করায় সেই সভাটি নৌকাতে গিয়ে শেষ করতে হয়েছিল। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে তারা দেশ শাসন করছে। তিনি বলেন, শেষ ৩৫ বছরে চীনের এই অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। এটা তারা কীভাবে সম্ভব করেছেন, সেটা জানার চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি সভাই অত্যন্ত হৃদতাপূর্ণভাবে হয়েছে। তাদের আন্তরিকতা দেখে কখনই মনে হয়নি, এর মধ্যে কোন কৃত্তিংংমতা রয়েছে। তারা বলেছেন, বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক শুধু ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’-এর মধ্যেই এখন সীমাবন্ধ নয়, এটা এখন প্রতিবেশী সুলভ সম্পর্ক হয়েছে। তিনি বলেন, দুই দেশের সর্ম্পক রাষ্ট্র-টু-রাষ্ট্র এর পাশাপাশি পার্টি-টু-পার্টি করতে হবে। সেটা শুধুমাত্র একটি দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সকল দলের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৬ আগস্ট চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। চলতি বছর এই সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি হয়েছে। ৫০ বছরের বন্ধুত্বের বার্তা তাদের পৌঁছে দিয়েছি। চীনের ভাইস প্রেসিডেন্টের সাথে অনুষ্ঠিত সভায় চীনের প্রেসিডেন্টকে এই দেশে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তিনি উল্লেখ করেন, আগামী দিনে আমাদের আসা-যাওয়া আরো বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, চাইনিজ ভাষা শেখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্নার খোলা হয়েছে। আগামী বছর এই কর্নার আরো ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করার আহ্বান জানিয়েছি। এর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এই সফরে বিমানবন্ধরে এসে বিদায় জানানো ও আসার পর স্বাগত জানাতে আসার জন্য চীনের রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, এই সফরের মধ্য দিয়ে চীনের সাথে সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি পাবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলের চীন সফর উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।

মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় ফিরলে প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এড. মোয়াযযম হোসাইন হেলাল ও এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ সাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব মোঃ সেলিম উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

চীনের সেন্ট্রাল কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না-সিপিসি আমন্ত্রনে গত বৃহস্পতিবার রাতে জামায়াতের ইসলামীর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল চীন সফরে যান। আমীরে জামায়াত নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা মুহাম্মাদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, সংগঠনের শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি ডা. আনোয়ারুল আজিম, আমীরে জামায়াতের পিএস নজরুল ইসলাম, ওমর হাসিব।