জাতীয়
এনসিপির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান নিয়ে শহীদ আবু সাঈদের ভাইয়ের স্ট্যাটাস
জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সরাসরি আমন্ত্রণ না পাওয়া এবং অনুষ্ঠান স্থলে খোঁজ না নেয়ায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন।

জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সরাসরি আমন্ত্রণ না পাওয়া এবং অনুষ্ঠান স্থলে খোঁজ না নেয়ায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন।
গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার শহীদ আবু হোসেন তার ফেসবুক আইডিতে ওই পোস্ট করেন।
ওই পোস্টে তিনি লিখেন, ‘মনে অনেক দুঃখ-ব্যথা নিয়ে পোস্ট করতে বাধ্য হলাম। সকল শহীদদের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অন্য শহীদ ফ্যামিলিদের মাধ্যমে আমন্ত্রিত হয়েছি। তাদের কারো সময় হয়নি আমাদের ফ্যামিলিকে আমন্ত্রণ জানানোর এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার পর কাউকে খোঁজখবর নেয়নি অথচ অন্যান্য শহীদ ফ্যামিলিদের নিয়ে টানাটানি।’
ওই পোস্টে তিনি আরো লিখেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেন প্রথম শহীদ আবু সাঈদ। যার আত্মত্যাগের কারণে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। তৈরি হয় নতুন বাংলাদেশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কয়জন সমন্বয়ক শহীদ আবু সাঈদের ফ্যামিলির খোঁজ নিয়েছে। অথচ অনেক সাধারণ মানুষ এবং অনেক রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিবর্গ আমাদের খোঁজ নিয়েছে। এখনো এই অবস্থা ভবিষ্যতের কথা বাদ দিলাম। যাই হোক নতুন রাজনৈতিক দলের সফলতা কামনা করছি।’
এদিকে আবু হোসেনের এই পোস্টটিতে বিভিন্নজন নানা মন্তব্য করেছেন। রায়হান আহমেদ রিওন নামে একজন মন্তব্যে লিখেছেন, ‘যার শাহাদাতে এই আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রুপ নিয়েছে, যার ওছিলায় নতুন বাংলাদেশ, তার পরিবারকে এতো তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়, আমরা মেধাবী সন্তানকে হারিয়েছি। এটার মর্ম তারা কি করে বুঝবে।’
রুহুল আমিন নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘প্রথম থেকে ওনাদের কাছে আমরা এমনভাবে উপস্থাপিত হয়েছি যে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারে কেউ যোগ্য লোক নেই। আর যারাও আছে তারাও তাদের কাছে করুণার পাত্র হিসেবে আছে। অথচ এই বিপ্লবে শহীদ আবু সাঈদসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এবং খুব কাছের লোকগুলো অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু আমরা আমাদের অধিকারগুলো আদায় করে নিতে পারিনি। আমাদের উপযুক্ত মানুষগুলোকে উপযুক্ত জায়গায় বসাতে পারেনি।’
আবু হোসাইন নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘সব সময় অতিরিক্ত আশা ভালো না ভাই। যা পেয়েছেন তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেন।’
এ ব্যাপারে আবু হোসেন রাতে এ প্রতিবেদককে জানান, ‘সরাসরি আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। শহীদ ফ্যামিলিদের মাধ্যমেই আমরা আমন্ত্রণ পেয়েছি। অনুষ্ঠানস্থলে আমাদের খোঁজখবর রাখেনি কেউ। বিষয়টিতে খুব দুঃখ পেয়েছি। সে কারণেই পোস্টটি দিয়েছি। কাউকে ছোট করার জন্য নয়।’
উল্লেখ্য, এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন এই রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়। নাহিদ ইসলামকে আহ্বায়ক এবং আক্তার হোসেনকে সদস্য সচিব করে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের নাম ঘোষণা করেন জুলাই বিপ্লবে শহীদ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন রাব্বীর বোন মীম আক্তার।