বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই জনগণের দোড় গোড়ায় পৌছতে হবে। মানুষের পাশে দাড়াতে হবে। ব্যাপকভিত্তিক দাওয়াতী কাজ করতে হবে। জনগণের জানমাল সংরক্ষণে আস্থার জায়গায় পৌছতে হবে। মানবিক মনের চাষ করলে, মানবিক সমাজ পাওয়া যাবে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আলফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ বিভাগের উদ্যোগে লিডারশীপ কর্মশালা -২০২৫ এর সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচএম হামিদুর রহমান আযাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন আবদুস সাদেক ভূইয়া, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।
আমীরে জামায়াত বলেন, বর্তমান বিশ্বে দুই ধরনের যুদ্ধ চালু আছে। একটি হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধ আর একটি হচ্ছে অস্ত্রের যুদ্ধ। দুইটাই বর্তমান। দুনিয়ার কোন না কোন অংশে এই যুদ্ধ চলমান রয়েছে। এখন মুসলিম বিশ^কে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। বাচতে হলে সবাইকে এক সাথে বাচতে হবে, মুসলিম বিশ^কে সেটা উপলব্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, দ্বীন কায়েমের জন্য আমরা নিয়মতান্ত্রিক ও স্বাভাবিক পন্থাকে গ্রহন করেছি। এর মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনমনকে এ ব্যাপারে আন্দোলিত করে দ্বীন কায়েমের কাজ এগিয়ে নিতে হবে।
১৯৭৯ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত রয়েছে। যদিও সেই নির্বাচনে জামায়াত ভিন্ন নামে অংশগ্রহন করেছিল। এরপর ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী অংশগ্রহন করে। ২০০৮ সালের পর যে সরকার গঠিত হয়েছিল, তাদের আক্রোশে পরিণত হয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। তারা অন্যায়ভাবে নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে ফাসি ও মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে ১১জন দায়িত্বশীলকে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার ব্যবস্থা করেছে। ৫০০ এর বেশী ভাই বোন জালিমের হাতে খুন হয়েছে। এমন কোন জেলা নেই যেখানে শহীদ হয়নি। এই জনপদকে শহীদের জনপদে পরিণত করেছিল। তিনি উল্লেখ করেন, আহত, পঙ্গুত্ববরণকারীর সংখ্যা ৭ সহ¯্রাধিক।
আমীরে জামায়াত বলেন, এবার ভিন্ন পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আল্লাহর মেহেরবানী ও শহীদের রক্তের ফোটার বদৌলতে ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই জনগণের দোড় গোড়ায় পৌছতে হবে। মানুষের পাশে দাড়াতে হবে। ব্যাপকভিত্তিক দাওয়াতী কাজ করতে হবে। জনগণের জানমাল সংরক্ষণে আস্থার জায়গায় পৌছতে হবে। মানবিক মনের চাষ করলে, মানবিক সমাজ পাওয়া যাবে। তিনি উল্লেখ করেন, শুধুমাত্র সরকারের একার পক্ষে নির্বাচন নিরপেক্ষ করা সম্ভব নয়। নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়ার ব্যাপারে সকলের ভূমিকা পালন করতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২৪ এর গণঅভ্যত্থানে প্রত্যেকটা শহীদ পরিবারের পাশে দাড়িয়েছি। তাদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য ১০ খন্ডে শহীদ স্মারক করা হয়েছে। এরপর আরো ২ খন্ড বেড়িয়েছে। আরো ২টির কাজ চলছে। এ ধরনের সরকারী- বেসরকারীভাবে কেউই করেনি। তিনি বলেন, সাধ্য মতো আমরা আহতদের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করেছি।