স্টাফ রিপোর্টার : মাহে রমযান মহিমান্বিত মাস, যে মাসে মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল হয়েছে এবং এ মাসেই বদর যুদ্ধ ও ফতেহ মক্কা সহ ইসলামের বড় বড় বিজয় এসেছে; তাই এ বরকতময় মাসে সকলকে যথাযথভাবে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে তাক্বওয়া র্অজন ও আত্মশুদ্ধির আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহি পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি গতকাল শুক্রবার বেলা ২টায় রাজধানীর মিরপুর-১-এর সনি মোড়ে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত মাহে রমাদানের পবিত্রতা রক্ষা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় সমাবেশে উপস্থতি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হেমায়েত হোসেন, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার,মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য নাসির উদ্দীন, শহিদুল্লাহ, হেদায়েত উল্লাহ, শাহ আলম তুহিন,অধ্যাপক আনোয়ারুল হক প্রমূখ। সমাবেশের পর ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বর্পূণ সড়ক প্রদক্ষিণের শেষে কাজীপাড়া মেট্রোরেলের নিচে এসে পথসভার মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত সভার মাধ্যমে শেষ হয়।
সেলিম উদ্দিন বলেন, দেশের সকল ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের ব্যাপারে পুরোপুরি স্বাধীন। কিন্তু যারা ঈমানের দাবিদার তাদেরকে পুরোপুরি কুরআন-সুন্নাহ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। মূলত, আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের ওপর সিয়াম পালনকে অত্যাবশ্যকীয় করে দিয়েছেন। পবিত্র কালামে হাকিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়ামকে ফরজ বা অত্যাবশ্যকীয় করে দেওয়া হয়েছে; যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর অত্যাবশ্যকীয় করে দেওয়া হয়েছিলো; যেন তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পারো’। কিন্তু একশ্রেণির মানুষ আছে যারা বাস্তবজীবনে ইসলামের অনুসারি না হয়ে ভোটের সময় টুপী, তসবীহ হাতে নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে ক্ষমতায় গিয়ে কুরআনের অনুশাসন অনুযায়ি দেশ পরিচালনা করেন না। অথচ কালামে পাকে ঘোষণা করা হয়েছে, যারা আল্লাহর দেওয়া বিধান অনুযায়ি বিচার ফয়সালা করে না তারা জালেম, ফাসেক এবং কাফের। তাই আগামী দিনে যারা কুফরী, ফাসেকী ও জালেমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে জনগণ আর তাদের পক্ষে রায় দেবে না। তাদেরকে এদেশে রাজনীতি করতে হলে নির্বাচনের ইস্তেহারে কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে দেশ পরিচালনায় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। তিনি দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সকলকে জামায়াতে পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, জনগণ জামায়াতকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে এদেশকে একটি একটি কার্যকর গণমুখী রাষ্ট্রে পরিণত করা হবে। আর তারই পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে দেশে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা সহ বিভিন্ন জনহিতকর কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। আমরা আত্মকর্মসংস্থান, বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য কর্জে হাসানা, অফেরৎযোগ্য অর্থ প্রদান সহ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়িদের পুঁজির যোগান দিয়ে যাচ্ছি। যাতে দেশের প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠে। তিনি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়তে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
মহানগরী আমীর বলেন, পবিত্র মাহে রমযান কুরআনের মাস। এ মাসে কুরআন নাযিল হয়েছিলো বলেই এ মাসের মর্যদা অন্য মাসের তুলনায় সমধিক। আর রমযানের কারণেই কুরআনের মর্যাদাও সমুন্নত হয়েছে। তাই এ মাসে রোজা পালন রোজদারদের জন্য সহজ করার জন্য সরকারকে কার্যকর পক্ষক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। একই সাথে দিনের বেলা হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ সহ সকল প্রকার অস্থিরতা, নগ্নতা ও বেহায়াপনা বন্ধের জন্য নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। সর্বোপরি দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে গ্রহণ করতে হবে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ। তিনি রমযানের পবিত্রতা রক্ষায় সরকারকে আপসহীন ভূমিকা পালনের আহবান জানান।