জামায়াতে ইসলামী দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন- সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে; আর এ আন্দোলনের চুড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।

আজ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কাফরুল পশ্চিম থানা আয়োজিত এক সূধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা দেশকে এক বৈষম্যহীন, দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অপরাধমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশে পরিণত করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন করে যাচ্ছি। সমাজে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা আমাদের আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল নাগরিক যাতে নিজেদের সাংবিধানিক অধিকার লাভ করতে পারে আমরা সে ধরনের একটি ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর। আমরা এমন এক সমাজ কায়েম করতে চাই যে সমাজের মানুষের সকল ধরনের মৌলিক অধিকারের নিশ্চিয়তা থাকবে। যে সমাজে ধর্মের ভিত্তিতে কোন বিভাজন থাকবে না। সর্বোপরি আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশে সুশিক্ষার সম্প্রসারণ। মূলত, সুশিক্ষাই পারে মানুষকে প্রকৃত মানুষে পরিণত করতে। তাই চলমান শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতিকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার কোন বিকল্প নেই। তিনি সুশিক্ষিত জাতি গঠনে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের জন্য অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু শঙ্কাটাও পুরোপুরি কেটে যায় নি। তাই আমাদেরকে খুবই সন্তর্পণে অগ্রসর হতে হবে।

রাজনীতিতে মূল্যবোধের চর্চার প্রসঙ্গ তুলে আমীরে জামায়াত বলেন, আগামীতে যারা যারা ক্ষমতায় আসবেন বা যেতে চান তাদেরকে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহীর অনুভূতি নিয়ে সকল কাজ সম্পাদন করতে হবে। কারণ, সকলকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হলেও আল্লাহকে ফাঁকি দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। আমরা এমন এক ইনসাফপূর্ণ নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই সকল প্রকার ভয় ও শঙ্কামুক্ত থাকবেন।

তিনি আরো বলেন, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা জনগণকে ভয়ভীতিমুক্ত পরিবেশ উপহার দিতে পারেন নি। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদেরকে জেনে-বুঝে আগামীর বাংলাদেশের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। জনগণ সত্যের পক্ষে রায় দিলে ৫ বছরের মধ্যেই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করা সহ ইতিবাচক পরিবর্তন করা সম্ভব’। তিনি সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মুসার সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহ আলম তুহিন প্রমূখ।