বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র উমামা ফাতেমা আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্ল্যাটফর্ম থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
শুক্রবার ( ২৭ জুন) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
ফেসবুক পোস্টে উমামা জানান, সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে তার আনুষ্ঠানিক যাত্রার ইতি ঘটেছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, গত এপ্রিল-মে মাস থেকেই তিনি কার্যত প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
উমামা অভিযোগ করেন, এনসিপি গঠনের পর থেকেই দলীয় রাজনীতির প্রভাব ও বিভিন্ন পক্ষের চাপের মুখে স্বাধীনভাবে কাজ করা অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। তার ভাষায়, “দলীয় লেজুড় ও প্রেসক্রিপশনের বাইরে ব্যানারটি কাজ করলে অনেকের রাজনৈতিক ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়ত।”
তিনি বলেন, জুনিয়র সদস্যদের দিয়ে তার বিরুদ্ধে 'Smear campaign' চালানো হয়েছে এবং ব্যানারের অভ্যন্তরীণ নেতারা এই প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
পোস্টে উমামা ফাতেমা জানান, প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন কমিটি গঠন নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি বলেন, “কমিটি নিয়ে অভিযোগ করলেও কোনো উত্তর পাইনি। উল্টো আমি নিজেই প্ল্যাটফর্মের পেইজে অপমানিত হয়েছি।”
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে চাননি, তবে শেষ মুহূর্তে প্ল্যাটফর্মের মঙ্গল কামনায় ভোট দিয়েছেন। যদিও তার মতে, ভোটের ফলাফলেও স্বচ্ছতা ছিল না। এমনকি নির্বাচনে অংশ না নেওয়া একজন প্রার্থী কিভাবে সদস্য হলেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
পোস্টের শেষ অংশে উমামা লেখেন, “আমি অভ্যুত্থানের স্বপ্নকে রক্ষা করার জন্যই এই প্ল্যাটফর্মে এসেছিলাম। কিন্তু এই প্ল্যাটফর্ম সেই স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে।”
তিনি জানান, প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে তার প্রদত্ত ভোট ও সকল ধরনের সমর্থনও প্রত্যাহার করছেন।
উমামা আরও বলেন, “আমি চাই সবাই পড়াশোনায় মনোযোগ দিক, ভবিষ্যত গড়ে তুলুক। যারা আমাকে ব্যবহার করেছে, তাদের আমি রুহের ভেতর থেকে বদদোয়া দিচ্ছি।”
উল্লেখ্য, উমামা ফাতেমা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একমাত্র নারী মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ছাত্র রাজনীতির একটি মুখ ছিলেন।