বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে রাজধানীর বনানী ও বিমানবন্দর সড়কে জনস্রোত নেমেছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী তাকে একনজর দেখার আকাঙ্ক্ষায় অবস্থান নিয়েছেন সড়কের দুই পাশে।
মঙ্গলবার (৬ মে) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক ও বনানী-কাকলী এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিনে রাজধানী কাকলীর প্রধান সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও ঢল নেমেছে রাস্তায়। পাঁয়ে হেঁটে, মোটর সাইকেল যে যার মত করে ছুটেছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে।
মিরপুর ১৩নং সেকশন থেকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ঢাকা মহানগর উত্তরের জাতীয়তাবাদী সামাজিক সংস্থার (জাসাস) যুগ্ম আহবায়ক সাইদুর রহমান বাবু। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মিরপুর থেকে নেতাকর্মী ছাড়াও শত শত সাধারণ মানুষ এসেছেন প্রিয় নেত্রী এবং তার দুই পুত্রবধূকে বরণ করে নিতে। ১৮ কোটি মানুষের দৃষ্টি আজ বিমানবন্দরের দিকে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এক নজর দেখতে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোহাম্মদ সোলেমান অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এসেছেন। কথা হয় বাংলানিউজের সঙ্গে। তিনি বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের কারণে এমন একটা দিন আসবে কখনো চিন্তাও করতে পারিনি। তবে আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া যে তিনি আমাদের মধ্যে প্রাণ প্রিয় নেত্রীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
তিনি কোনো দলীয় কর্মী নন উল্লেখ করে সোলেমান বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমি খালেদা জিয়ার ভক্ত। দীর্ঘদিন পর তাকে দেখার সুযোগ পাবো বলেই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এসেছি।
এদিকে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়াম, নৌবাহিনী সদর দপ্তর, বনানী ও কাকলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ লোকজন।
পায়ে হেঁটে, মোটরসাইকেলে, বাসে ও কাভার্ড ভ্যানে করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে এয়ারপোর্ট এলাকায় যেতে দেখা যায় বিএনপি ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটির ঢাকার হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
এর আগে, লন্ডনে চিকিৎসা শেষে বাংলাদেশ সময় সোমবার (৫ মে) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বহনকারী কাতারের রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার উদ্দেশে উড়াল দেয়।
বিএনপির সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান।
গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো একই বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান খালেদা জিয়া। সেখানে পৌঁছানোর পর তাকে লন্ডন ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালটিতে তিনি ১৭ দিন প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি এবং অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি তার বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন।