জনগণকে গরম করে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে হয়েছে; তাই নতুন করে জনগণকে গরম না করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ১০:৩০টায় রাজধানীর কাকরাইলের কর্ণফুলী মার্কেটের সামনে নভেম্বরে গণভোট অনুষ্ঠানের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্বারক লিপিলিপি প্রদান উপলক্ষ্যে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইনের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টনে গিয়ে মূল সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দীন মানিক ও ইয়াছিন আরাফাত প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, যারা জুলাই সনদ ও গণভোটের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারা মূলত জুলাই বিপ্লবকেই অস্বীকার করছেন। এরা বাংলাদেশে দিল্লি মার্কা রাজনৈতিক শক্তি। তাই জনগণ তাদেরকে আর কোন ভাবেই মেনে নেবে না বরং দেশ ও জাতিস্বত্ত্বাবিরোী যেকোন ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দেবে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জুলাই বিপ্লব মৌলবাদের উত্থান বা দক্ষিণ পন্থার উত্থান এটি ভারতের ভাষা। এটা কোন বাংলাদেশীর ভাষা হতে পারে না। এদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নানা ছলছুতায় নির্বাচন পিছিয়ে ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। কিন্তু দেশপ্রেমী জনতা এদেশে কখনো ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন হতে দেবে না। তিনি চলতি নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট আয়োজন করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
তিনি প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্যণ করে বলেন, লন্ডনে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে এদেশে তা বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না বরং বাংলাদেশের জনগণের সিদ্ধান্তই এদেশে বাস্তবায়িত হবে। মূলত, একই দিনে গণভোটের সিদ্ধান্ত জুলাই চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ও জুলাই শহীদদের রক্তের সাথে তামাশার শামিল। তাই জনগণ জুলাই চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক কোন কিছুই মেনে নেবে না। তিনি জুলাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এ বিপ্লব এমনিতেই হয়নি বরং চড়ামূল্য দিয়ে তা কিনতে হয়েছে। এজন্য প্রায় ২ হাজার ছাত্র-জনতা রাজপথে প্রাণ দিয়েছেন। ৪০ হাজারের মত আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। তাই জুলাই শহীদদের অসাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করতে জুলাই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তির কোন বিকল্প নেই। তিনি গণভোটের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকলকে রাজপথে আপোষহীন থাকার আহবান জানান।
তিনি বলেন, সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলেও তারা এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারেনি। পতিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখন প্রশাসনে সক্রিয় থেকে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন। গণহত্যাকারীদের বিচারের ক্ষেত্রে আশাবাদী হওয়ার মত অবস্থা সৃষ্টি হয়নি। সর্বোপরি প্রশাসনে রয়েছে একশ্রেণির দলবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারি। তাই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হলে সকল অংশীজনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, দলনিরপেক্ষ প্রশাসন ও গণহত্যাকারীদের বিচার দৃশ্যমান হওয়ার পরই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। জনগণ অতীতের মত হাসিনা মার্কা নির্বাচন আর মেনে নেবে। তিনি গণদাবি মেনে নিয়ে সরকারকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।