যশোরের জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি ও জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরিয়ে না দিলে আবারো রাজপথে জনগণ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় ফ্যাসিস্ট সরকারের গ্রেফতারকৃত অনেক নেতাকর্মী মুক্তিলাভ করেন। রাষ্ট্রপতির আদেশে অনেককে তৎক্ষণাৎ মুক্তি দেওয়া হয়। দেশবাসী আশা করেছিল যে, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ৭ মাস অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তিলাভ করেননি। জামায়াত স্বৈরশাসনামলে জুলুম এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আর স্বৈরশাসন মুক্ত বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এখনো বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে বিচারিক কার্যক্রমসমূহ সারা বিশ্বে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত। স্বৈরাচারের আমলে গ্রেফতারকৃত জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তার প্রতি চরম জুলুম ও অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তাঁকে এখনো আটক রাখায় জাতি বিস্মিত ও হতবাক। দেশবাসী স্বৈরাচারের কবল থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি চায়। এই পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যশোরের টাউন হল মাঠে এটিম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে যশোরে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও গনমিছিলে তিনি একথা বলেন।
অধ্যাপক গোলাম রসুল আরো বলেন, বিশ্বের জনগণ এটা জানে, আজ থেকে ১৩ বছর আগে স্বৈরাচারী হাসিনার অন্যায়, জুলুম, নির্যাতনের প্রতিবাদ করার কারনে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে যেতে হয়েছে। একটি জালেম স্বৈরাচারী সরকারের চরিত্র এর মাধ্যমেই প্রকাশ পেয়েছে । ৫ আগস্টের পরে এখনো কি জালেমের কারাগার থাকবে ? সাত মাস আতিবাহিত হয়েছে এখনো এটিএম আজহারুল ইসলামকে এই সরকার মুক্তি দেয়নি। কেন দেয়নি এটা বাংলাদেশের সাধারন মানুষের প্রশ্ন। কোন কারণে তার মুক্তি ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে? বাংলাদেশ সর্বস্তরের মানুষ তা জানতে চায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কথিত যুদ্ধাপরাধের যে বিচার হয়েছে দেশের আইনে এবং আন্তর্জাতিক আইনে এই যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল কোনভাবেই উত্তীর্ণ নয়। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের নামে কতগুলো সৎ, ধর্মভীরু, মানুষের কল্যানে যারা আজীবন কাজ করে গেছে তাদেরকে গ্রেফতার করে অন্যায় ভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছে, বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। তারা ন্যায় বিচার পায়নি। এদেশের মানুষ সেটার স্বাক্ষী। বাংলাদেশ গত ১৬ বছর একটি বৃহৎ কারাগারে পরিণত হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কারাগার উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার দৃষ্টিকোণ থেকে চার দেয়ালের ভেতরের কারাগার থেকে জঘন্য ছিল। চার দেয়ালের ভিতরের কারাগার সেটা, যেখানে গ্রেফতারের ভয় ছিলনা। কিন্তু এ বাংলাদেশের সর্বত্র মানুষ গ্রেফতারের ভয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। তারা এদেশে ক্ষমতায় এসে শুধু দেশকে ধ্বংসই করেনি, প্রশাসনকেও দলীয়করণ করেছে, দেশের মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। সবচেয়ে বেশি জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে ইসলাম, মুসলিম জাতীসত্বা, আলেম-ওলামা, পীর মাশায়েখ ও ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার উপরে।
যশোরের জেলা নায়েবে আমীর মাও: হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং জেলা অফিস সেক্রেটারী নূন ই-ইলা নুর মামুন এর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আবু জাফর , সহকারি সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, মাওলানা রেজাউল করিম, অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, জেলা কর্ম পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, শহর আমীর অধ্যাপক শামসুজ্জামান, সদর থানা আমির অধ্যাপক আশরাফ আলী, ছাত্রশিবির শহর সভাপতি এইচএম শামীম, পশ্চিম জেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, পূর্ব জেলা সভাপতি আশিকুজ্জামান প্রমুখ
নেতৃবৃন্দরা অনতিবিলম্বে জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। এবং জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়ার জোর দাবি করেন। অন্যথায় দেশের সকল জনগণকে সাথে নিয়ে এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দূর্বার গণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনাব আজহারুল ইসলামের মুক্তি ও দলের নিবন্ধন ফিরিয়ে আনতে সরকার কে বাধ্য করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ।
মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই আজহার ভাইয়ের মুক্তি চাই ,আমার নেতা ভিতরে ,খুনি কেন বাহিরে। আমার নেতা ভিতরে স্বৈরা'চার কেন বাহিরে,এক দফা এক দাবি আজহার ভাইয়ের মুক্তির দাবি,একটায় উক্তি আজহার ভাইয়ের মুক্তি,আমজনতা দিচ্ছে ডাক আজহার ভাই মুক্তি পাক,জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরিয়ে দাও দিতে হবে, বীর জনতা ঐক্য করো আজাহার ভাইকে মুক্ত কর। ফ্যা'সিবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না। মুক্তির রাজপথ ইসলামী বিপ্লব আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যু'দ্ধ। এমন স্লোগান দিতে দিতে শহরের টাউন হল মাঠ থেকে শুরু করে মনিহার যেয়ে শেষ করেন ।