কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন যেন সঠিক সময়ে না হয় সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক গ্রন্থ প্রকাশনার আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা দিয়ে একটা জায়গায় আসার চেষ্টা করছি যে, একটা নির্বাচন যেন করা যায়। আমি কোন দলকে দোষারোপ করতে চাই না, বা কোন ব্যক্তিগত দোষারোপ করতে চাই না। কিন্তু হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করি, কোন কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, নির্বাচন যেন সঠিক সময় না হয় তার চেষ্টা করছে। এটা ঠিক হচ্ছে না।
দ্রুত একটা রাজনৈতিক সরকার দরকার উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা সবকিছু নির্ভর করছে একটি নির্বাচিত সরকারের ওপর। সবাই তাকিয়ে আছে, কবে সেই ব্যবস্থা আসবে। তিনি বলেন, জাতীয় সংস্কার কমিশন অতি অল্প সময়ের মধ্যে অন্তত কিছু সংস্কারের কাজ শেষ করতে পেরেছেন। এটার প্রয়োজন ছিল পরিবর্তনের পরে।
রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির উপ-প্রকাশনা কমিটির প্রকাশনায় ‘মহাকালের মহানায়ক শহীদ জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৬৪০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন আবদুস সালাম ও আবদুল হাই শিকদার। হামিদুল ইসলামের প্রচ্ছদে গ্রন্থটির মূল্য রাখা হয়েছে দুই হাজার টাকা।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান ২২ সালে যে ৩১ দফা দিয়েছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় কিন্তু আমরা এই সংস্কারগুলো দিয়েছি। ম্যাডাম (বেগম খালেদা জিয়া) দিয়েছিলেন ২০১৬ সালে ভিশন-২০৩০ আর আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন ১৯ দফা কর্মসূচি। সব কিছু মিলিয়ে এসব সংস্কার। বিএনপির জন্ম তো সংস্কারের মধ্যে, সংস্কার দিয়েই আমরা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদূরীয় শাসন ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট জিয়া নিয়ে এসেছিলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফ্রিডম অফ প্রেস প্রেসিডেন্ট জিয়া দিয়েছিলেন, জনগণের মৌলিক স্বাধীনতার অধিকারগুলোর স্বাধীনতা প্রেসিডেন্ট জিয়া দিয়েছিলেন। আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, বাংলাদেশে যা কিছু ভালো হয়েছে সব বিএনপির হাত দিয়ে হয়েছে, জনগণ হাত হয়েছে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাত দিয়ে হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়ার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগ। জিয়ার মাজার পর্যন্ত তুলে নিয়ে যাবে, তার নাম গন্ধ থাকবে না, তাই করেছিল। পারে নাই। কারণ সত্যিকার অর্থেই জিয়াউর রহমান ক্ষণজন্মা আল্লাহ যাকে পাঠিয়েছেন মানুষের কল্যাণের জন্য তাকে কি এত সহজেই ছুড়ে ফেলা যায়? যায় না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান আমাদের নেতা যিনি আজকে নতুন করে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করবার জন্য কাজ করছেন। আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে নিশ্চয়ই এই বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করব এবং গণতন্ত্রকে আরো উজ্জীবিত করব। অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিকীকরণ করব।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশররফ হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুল হাই শিকদার, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, কলামিস্ট সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বক্তব্য রাখেন।