ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের অন্যতম সংগঠন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলা, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতা, ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের নেতৃত্বে গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে গণঅধিকার পরিষদের কর্মসূচিতে যোগ দেন জামায়াত নেতারা।

মিছিলে যোগ দেওয়ার আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. শামছুর রহমান, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী প্রচার সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন, ওয়ারী পূর্ব থানা আমির মোহতাসিম বিল্লাহ প্রমুখ।

বক্তারা পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি না করে গণভোটের মাধ্যমে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, জুলাই চেতনা বাস্তবায়নের জন্য বিপ্লবী সরকারের কাছে দাবি জানাতে হয়, রাজপথে নামতে হয় এটি লজ্জাজনক।

বিপ্লবী সরকারকে বিপ্লবের চেতনা বাস্তবায়নে আপসহীন নীতি অবলম্বনের আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, কোনো দলের প্রতি আনুগত্যশীল না হয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে মনোযোগী হওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।

পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে সরকার যদি কোনো রাজনৈতিক দল থেকে চাপ পেয়ে থাকে তবে সরকারকে সেটি জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে।

তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন ব্যতীত দেশের মানুষ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না। জনগণ যেই নির্বাচন মেনে নেবে না, জামায়াতে ইসলামী সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।

নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেন, বিপ্লবী নেতার ওপর হামলার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সরকার এখন পর্যন্ত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজনকেও গ্রেপ্তার করেনি, করতে পারেনি। দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দেওয়া হলে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ছাত্র-জনতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হতে পারে। আওয়ামী লীগের ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ না করলে বিপ্লবী নেতাদের নুরের মতো পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে। তাই অনতিবিলম্বে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ করে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।