রাজনীতি
এনসিপি’র ইফতার মাহফিল
এনসিপি একইসাথে আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন চায়: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সংস্কার করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তার দল এনসিপি একইসাথে আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন চায় বলেও জানান।
Printed Edition

জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সংস্কার করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তার দল এনসিপি একইসাথে আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন চায় বলেও জানান।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, আলেম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সম্মানে এনসিপির ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি জরুরি। বাংলাদেশবিরোধী শক্তিরা এখনও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ফয়সালা করা দরকার মন্তব্য করে এনসিপি’র আহ্বায়ক বলেন, জাতীয় ঐক্য ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলুপ্ত সম্ভব নয়, দেশবিরোধীরা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে, দেশের বিপদ এখনো কাটেনি। গণহত্যার বিচারের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ফয়সালা করতে হবে। জুলাই চার্টারের মধ্য দিয়ে সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। জুলাইয়ের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
তিনি বলেন, আমরা যার যার আদর্শ নিয়ে জনগণের কাছে যাবো। জনগণ যাদের পছন্দ করে তাদের বেছে নিবে। আমরা নতুন সংবিধান চাই, চাই রাজনীতিতে নতুন বন্দোবস্ত। দেশ পুর্নগঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান সাবেক এই তথ্য উপদেষ্টা।
দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সকলকে এক সিদ্ধান্তে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মধ্যে বাংলাদেশের মধ্যে, বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে রাজনৈতিক বিপ্লব ঘটেছে। নতুন রাজনীতিতে চাঁদাবাজদের স্থান হবে না, হানাহানি-টেন্ডারবাজি চলবে না।
আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী যত শক্তি আছে সবাই এক হয়ে দেশের জন্য কাজ করবে। আমাদের রাজনৈতিক মিশন-লক্ষ্য আলাদা হতে পারে। তবে আমরা এটা বলতে পারি যে আমরা আজ এখানে যারা সবাই ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালিয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সবাইকে এক হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে দেখতে চাইনি, দেখতে চাই না। সব দলকে এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য উদাহরণ রেখে যেতে হবে। তিনি বলেন, আমরা একটা দীর্ঘ লড়াই করে এসেছি। দীর্ঘ সময় ধরে আমরা ফ্যাসিবাদী শাসনের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। নিপীড়ন, গুম, খুন হত্যার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে আমরা সবাই মিলিত হতে পেরেছি। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা প্রত্যাশা করছি, এ রমযানের ইফতারের মধ্য দিয়ে আমাদের যে বিভেদ রয়েছে সেটি দূর করতে পারবো। আমরা একটা সংস্কার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, আশা করছি শিগগির আমাদের প্রত্যাশিত সংস্কার সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, সব দলের মধ্যে নীতিগত দ্বিমত রয়েছে তবে, রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সফলভাবে সংস্কার ও গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করে সকল বিভেদের অবসান হবে।
ইফতার মাহফিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সিনিয়র নেতা পেশাজীবীসহ স্বৈরাচার বিরোধী অংশীজনেরা অংশ নেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ, নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতির জোনায়েদ সাকি, জাগপার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও সাইফুল হকসহ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পেশাজীবীদের মধ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ফরহাদ মজাহারসহ অন্যান্যরা অংশ নেন।