‘ডাকসু, জাকসুতে দেখলাম আমাদের কিছু বন্ধু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। আমরা বলতে চাই, নির্বাচন বর্জন না করে নিজেদের খারাপ আচরণগুলো বর্জন করুন। জনগনের কাছে যান, জনগনের ভালবাসা পেতে চেষ্টা করুন। জনগন কি চায় তা বোঝার চেষ্টা করুন। তাহলে আর ভোট বর্জন করতে হবে না।’
সোমবার বিকালে পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার ঘোষেরহাট বাজারে সদর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগ আয়োজিত এক যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুদ সাঈদী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে তাদের অধিকাংশই চেয়ারটাকে পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে মনে করেছে। দেশ বা জনগনের উন্নয়নের কথা তারা চিন্তা করেনি। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে, বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। তারা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চেষ্টা করেছে, কিন্তু কেউ পারেনি। তিনি আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে দাবী করে বলেন, পিআর পদ্ধতি একটি গ্রহনযোগ্য পদ্ধতি। কিন্ত যারা কালো টাকায় নির্বাচন করে এবং মনোনয়োন বানিজ্য করে তারাই কেবল পিআর পদ্ধতির বিরোধিতা করে।
যুব সমাবেশে মাসুদ সাঈদী আরো বলেন, অতীতের অন্য সব নির্বাচনের সাথে ২০২৬ সালের নির্বাচন মিলানো যাবে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন একটি নতুন মেরুকরণ চলছে। নিবন্ধিত অনেকগুলো ইসলামী দল মিলে একটি নতুন মোর্চা তৈরী হয়েছে। ৫৪ বছরে আপনারা অনেক দল এবং অনেক মার্কা দেখেছেন। এবার ইসলামী দলসমূহের মনোনীত প্রার্থীদেরকে সবাই ভোট দিবেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা রাজনৈতিক হানাহানি করিনা। বিভেদের রাজনীতি করিনা। আমাদের রাজনীতি উন্নয়নের, আমাদের রাজনীতি ভালবাসা আর সৌহার্দের। ৫৪ বছরে দেশের যে উন্নয়ন হবার কথা ছিল তা হয়নি। দেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশী এখনো দারিদ্র সীমার নীচে বাস করছে। শিক্ষার হারও শতভাগ হয়নি। আমরা দূর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ চাই। আমরা সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ চাই। আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ চাই।
মাসুদ সাঈদী বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, কিছুদিন আগে পিরোজপুরে একটি দলের সদর উপজেলার কাউন্সিল অধিবেশন হয়েছে। এই কাউন্সিলে তারা নিজেদের দলের নিজেদের কর্মীদের ভোটের ব্যালট বাক্স নিজেরাই ছিনতাই করেছে। তাদের নিজের কর্মীরা নিজেদের নেতার কাছেই নিরাপদ নয়। যদের কাছে নিজের দলের কাউন্সিলের ব্যালট বাক্স নিরাপদ নয়, তাদের কাছে জাতীয় নির্বাচনের ব্যালট বাক্স কিভাবে নিরাপদ থাকবে? তিনি দাবি করেন, জামায়াতে ইসলামীর প্রতিই মানুষের আস্থা রয়েছে। আমাদের মাঝে কোন কোন্দল নাই। কোন দূর্নীতি নাই।
মাসুদ সাঈদী তার পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমার পিতা আল্লামা সাঈদী দূর্নীতি করেননি। তার সন্তানরাও দূর্নীতি করেনি। এবং আমরা তার প্রমাণও দিয়েছি। আমার পিতা দুই বার পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। আমিও জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমাদের বিরুদ্ধে কেউ এক টাকার দূর্ণীতিরও অভিযোগ আনতে পারেনি।
যুব সমাবেশে সদর ইউনিয়ন যুব বিভাগের সভাপতি ফেরদাউস হোসেন সোহাগের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আহাদুল ইসলাম নাঈমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জিয়ানগর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আলী হোসেন, সেক্রেটারি তৌহিদুর রহমান রাতুল, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল হাই, সদর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা খাইরুল বাশার, উপজেলা বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা কবির হোসেন সহ জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।