একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতি শুধু একটা পতাকা পেয়েছে, নাগরিক স্বাধীনতা পায়নি। অথচ এদেশের নাগরিকেরা সেই সংগ্রাম মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের দাবিদারদের হাতে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা লুন্ঠিত হয়েছে। যার কারণেই বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করে। এই স্বাধীনতা আর কাউকে নষ্ট করতে দেয়া হবে না। কারো বাপের সম্পত্তি হবে না বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা অর্জনকারী এদেশের ছাত্র-জনতাসহ সকল ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তিকে নিয়ে জামায়াতে ইসলামী নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়।

গতকাল শনিবার দিনব্যাপী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ওয়ার্ড সভাপতি- সেক্রেটারি শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এসব কথা বলেন। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের বিগত ১৭ বছরের জঞ্জাল মুক্ত না করে জাতি কোন নির্বাচন চায় না। জঞ্জাল মুক্ত করে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করার আগেই নির্বাচন দিলে, সেটি হবে একটি বিতর্কিত নির্বাচন। এজন্য আগে জঞ্জাল মুক্ত করে প্রত্যাশিত সংস্কার করতে হবে। তবেই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হবে। এসময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির জন্য সময়ও নষ্ট করা যাবে না, আবার কারো চাপে তড়িঘড়ি করে নির্বাচনও দেওয়া যাবে না। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ ভোট চুরির কাজে শিক্ষকদের ব্যবহার করে জাতির কাছে শিক্ষক সমাজের মর্যাদা নিঃস্ব করে দিয়েছে। আগামীতে যাতে শিক্ষকেরা তাদের মর্যাদা ফিরে পায় সেজন্য ভূমিকা রাখতে হবে। জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুর রব।

অনুষ্ঠানে ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে ড. আব্দুল মান্নান, শামসুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল আমিন, এডভোকেট এস. এম কামাল উদ্দিন, আব্দুস সালাম, অধ্যক্ষ নুর নবী মানিক, সৈয়দ সিরাজুল হক, কামরুল আহসান হাসান, শেখ শরিফ উদ্দিন, মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মহানগরী প্রচার ও মিডিয়া সহকারী সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন। এছাড়াও শিক্ষাশিবিরে মহানগরীর দক্ষিণের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী ইতিবাচক ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বিরোধিতা, প্রতিহিংসা, ক্ষোভের রাজনীতির কবর রচনা করতে চায়। জামায়াতে ইসলামী একটা নতুন ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই নতুন ধারার রাজনীতির প্রবর্তক আমীরে জামায়াত। এসময় তিনি আরো বলেন, পরাজিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির উস্কানি দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ রাজপথে আর একটা মানুষেরও রক্ত ঝরাতে পারবে না। এদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের সকল নৈরাজ্য রুখে দিবে। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা অতীতের মত জনগণের পাহারাদার হয়ে কাজ করবে। তিনি গণহত্যার দায়ে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। এছাড়াও কারাবন্দী জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।