বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশেরতো সমস্যার শেষ নেই। সুতরাং মনে হয়, প্রত্যেকটি দল জনগণের সঙ্গে তাদের আগামীর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখানোর কথা বলা দরকার এবং বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করছি। ১৮ মাসে এক কোটি লোকের চাকরি দেব, আমরা ব্যবস্থা করবো। আমরা বাংলাদেশের জনগণের বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গতকাল শনিবার সংস্কার নির্বাচন: প্রেক্ষিত জাতীয় ঐক্য শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চর্চা চলছে। এই চর্চার মাধ্যমে ক্ষতি বেশি হচ্ছে কি না তা আমাদের বিবেচনা করতে হবে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, জাতিকে কি আমরা কনফিউজ করছি, প্রতিনিয়ত জাতির মধ্যে কি আমরা বিভেদ সৃষ্টি করছি, কোনো কারণ ছাড়া? খুবই পরিষ্কার কথা, প্রত্যেক দলের চিন্তা-ভাবনা ও দর্শন ভবিষ্যৎ রূপরেখা থাকবে। আপনি নিয়ে যান আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে, আপনি ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসেন, পাস করেন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) অডিটোরিয়াম এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে আরও বক্তব্য দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ব্র্যাক চেয়ারম্যান ডক্টর হোসেন জিল্লুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্টজন।
খসরু বলেন, ঐকমত্য কমিশনে কতদিন চর্চা করলাম, এখন আবার কমিশনের মতের বাইরে গিয়ে আবার নতুন নতুন দাবি নিয়ে জাতিকে বিভক্ত করবেন! যে সমস্ত দেশ এই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে এই প্রক্রিয়াতে ঢুকছে, এই চক্রের মধ্যে যারা পড়েছে সেই সমস্ত দেশ আজ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায়। আমরা বাংলাদেশ কিন্তু সেদিকে নিয়ে যেতে পারবো না, আগে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন ডেমোক্রেটিক অর্ডার দেশে ফিরিয়ে আনেন, যেটার অনুপস্থিতিতে আজকে বাংলাদেশ এই খারাপ অবস্থায়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শুধু রাজনৈতিককে গণতান্ত্রিক করলে তো চলবে না। অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক করতে হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষ রাজনীতিতে যেভাবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ইকুয়াল এক্সেস পাবে, অর্থনীতিতে ইকুয়াল এক্সেস সবাইকে পেতে হবে।
তিনি বলেন, আগামীর বাংলাদেশ গড়ার জন্য পুরো একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতে আমাদের ঢুকতে হবে। কোনো সাইকেল যদি ডেমোক্রেটিক সাইকেল না হয়, শুধুমাত্র নির্বাচিত সরকার হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র কাজ করবে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্র তখনই কাজ করবে যখন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যেকটি বিষয় সম্পৃক্ত হতে পারে। তারা অংশীদার হতে পারবে।
খসরু বলেন, তর্ক-বিতর্ক ও বিভক্তি সৃষ্টি না করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনার পর প্রত্যেকে যাতে মুক্ত পরিবেশে কাজ করতে পারে, প্রত্যেক রাজনৈতিক দল তাদের কথাগুলো মুক্তভাবে বলতে পারে, সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে- এগুলো হচ্ছে মূল বিষয়। এগুলোতে না গিয়ে আমরা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে কিন্তু প্রশ্ন, একটু কনফিউশন সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি।