সরকার শপথ না পড়ালে নিজেই শপথ নিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বহিরাগত কোনো প্রশাসক ও উপদেষ্টাকে নগর ভবনে ঢুকতে দেওয়া হবে না- এমন কথাও বলেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় নগর ভবনের দোতলায় বানানো মঞ্চে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন ইশরাক। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং তার কতিপয় উপদেষ্টা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে আমাদের এই নির্বাচনের রায়ের পরে তালবাহানা করেছে। আমাকে শপথ না পড়ানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা তারা অসম্মান করেছে। তারা আইন আদালত মানে না, তারা নির্বাচন কমিশন মানে না। তারা সংবিধান মানে না, তাহলে তারা মানেটা কী? এই বাংলাদেশের মানুষ, আমরা যদি আগামী কাল থেকে তাদের না মানা শুরু করি, তাহলে এর দায়দায়িত্ব কে নেবে?
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে ইশরাক বলেন, পুরো বাংলাদেশ আমলে নিলে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র খুবই সামান্য পদ। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরেও শপথ পড়ানো নিয়ে যারা তালবাহানা করছে, কীভাবে তাদের অধীনে আগামী দিনে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে, সেটা নিয়ে জনগণের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আমার শপথ আমিই পড়ব : সরকার অবিলম্বে শপথ না পড়ালে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারে নিজের শপথ নিজেই পড়ে চেয়ারে বসার ঘোষণা দেন ইশরাক। তিনি বলেন, ইতঃপূর্বে যখন আমরা যমুনা ঘেরাও করেছিলাম তখন কী হলো, নাটক মঞ্চস্থ করার পর বলা হল, এটার একটা সমাধান হবে। আমরা জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে নিজেদের সিদ্ধান্তে সড়ক ছেড়ে দিয়েছিলাম; কারও নির্দেশনায় নয়।
ইশরাক বলেন, এই নগর ভবন দুই সপ্তাহ যাবৎ আমরাই নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, আমরাই দখল করে রেখেছি। এই শপথ যদি তারা না পড়ায়, আমি গিয়ে আমার চেয়ারে বসতে পারি, দুই মিনিটও লাগবে না। ঢাকা শহরের জনগণ আমাকে বার বার বলেছে, কেন আমি শহীদ মিনারে গিয়ে শপথ পড়ে নিজেই কেন দায়িত্ব নিচ্ছি না।
সরকারের কাউকে নগর ভবনে ঢুকতে দিব না : সরকারের কোনো উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তা ও প্রশাসক- কাউকে নগরভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি নেতা ইশরাক। সচিবালয়ে আগুন লাগার পর থেকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বসছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তারাও নিয়মিত অফিস করছিলেন নগর ভবনে। বহিরাগত কোনো প্রশাসক দিয়ে এই নগর ভবন পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না, হবে না। এটাই আমাদের শেষ কথা, শেষ বার্তা।
প্রয়োজনে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আমরা প্রশাসক বসাবো। যতদিন পর্যন্ত আগামী নির্বাচন হচ্ছে না, ততদিন পর্যন্ত সব কার্যক্রমের অধিকার আমাদের কাছেই আছে। এটাই আমাদের বার্তা, এটাই আমাদের শেষ কথা।