আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু করে আওয়ামী লীগকে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করার দাবিসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে, আগামী ৫ আগস্ট ‘মার্চ ফর বাংলাদেশ’ কর্মসূচির আওতায় শাহবাগ থেকে সচিবালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায়, ঢাকার শাহবাগে অনুষ্ঠিত ‘শহীদী সমাবেশে’ ইনকিলাব মঞ্চ এই ঘোষণা দেয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সদস্যরা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় সংগঠক সারজিস আলম, আপ-বাংলাদেশের আলী আহসান জুনায়েদ এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সেক্রেটারি ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ আরও অনেকে।

সারজিস আলম বলেন, সংস্কার না নির্বাচনÑএই বিভ্রান্তিমূলক খেলা বন্ধ করে আগে শহীদদের বিচারের উদ্যোগ নিতে হবে। শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ না করে দেশে কোনো রাজনীতি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

আপ-বাংলাদেশের সংগঠক জুনায়েদ বলেন, আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী দল হিসেবে রাজনীতি করছেÑএটা লজ্জাজনক। আমরা থাকতে এ দলকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।

শহীদ ইমাম হাসানের ভাই রবিউল আউয়াল বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকতেই আমাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে। এটি একটি প্রহসন। বিচার ছাড়া কোনো সংস্কার অর্থহীন।

শহীদ সাইমের মা বলেন, “আমার নিরস্ত্র ছেলেকে যাত্রাবাড়ীতে গুলী করে হত্যা করা হয়েছে। ঈদ আসলেও আমাদের ঘরে কোনো আনন্দ নেই। আমার সন্তানের হত্যার বিচার চাই।”

২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত মেজর তানভীর হায়দার নূরের স্ত্রী তাসনূভা মাহা বলেন, আমার স্বামীর লাশ আজও পাইনি। দাফন করা লাশটি আমার স্বামীর ছিল না। আমার সন্তানদের পর্যন্ত লাঞ্ছনা করা হয়েছে।

সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি চার দফা দাবি উত্থাপন করেন এবং ঘোষণা দেন, আগামী ১০০ দিনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ৫ আগস্ট 'জুলাই জনতা' সচিবালয় ঘেরাও করবে।

সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো-

১. আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু করতে হবে এবং আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশ, আদালতের রায় ও রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

২. শাপলা চত্বরের ঘটনার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তায় একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে শহীদদের তালিকা প্রকাশ ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

৩. পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।

৪. দেশের সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচারের বিষয়ে স্পষ্ট ধারা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।