বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, মহান আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর সুদকে করেছেন হারাম। হালাল ব্যবসার মাধ্যমে একজন মুমিন তার জীবনকে আল্লাহর সান্নিধ্যে নেয়া সহজ। কিন্তু অনৈতিকভাবে ব্যবসা করা মানে সুদের সমতুল্য। তাই আমাদের সকলকে কুরআন ও সুন্নাহ'র ভিত্তিতে ব্যবসায়ীদের জীবন পরিচালনা করতে হবে। তিনি বলেন, আপনারা কাউকে চাঁদাবাজি করতে দিবেন না, অন্যায়ভাবে কেউ চাঁদা দাবি করতে আসলে তাকে ধরিয়ে প্রশাসনের কাছে দিতে হবে। ব্যবসা করতে গিয়ে ওজনে কম দেয়া যাবে না। আপনারা হালালভাবে ব্যবসা করবেন এবং সঠিক পরিমাপে মালামাল দিবেন। তাহলে আপনাদের ব্যবসা হালাল হবে। এক্ষেত্রে আপনাদের সামগ্রিক সহযোগিতার জন্য জামায়াত-শিবির সর্বদা আপনাদের পাশে আছে ও থাকবে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে খুলনা-৬ আসনের পাইকগাছা উপজেলার ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি জি এম শুক্রুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও পাইকগাছা পৌর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মো. শফিয়ার রহমান পরিচালনায় খুলনা জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য এস এম আমিনুল ইসলাম, ছাত্র শিবির খুলনা জেলার দক্ষিণের সভাপতি আবু জার গিফারী, পাইকগাছার পৌর নায়েবে আমীর স ম আব্দুল্লাহ আল মামুন, ছাত্রশিবিরের সাবেক উপজেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিপো মার্কেটের সাবেক সভাপতি মনোহর চন্দ্র সানা, বাগদা পোনা হ্যাচারী সমিতির সদস্য শুনিল কুমার, বস্ত্র ব্যবসা সমিতির উপদেষ্টা কার্তিক চন্দ্র দেবনাথ, ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোগেণ, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মুরশাফুল আলম, স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মধুরঞ্জন কর্মকার, প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মো. আব্দুল আজিজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, পনের বছরের অধিক সময় ধরে বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের কড়াল গ্রাসে আবদ্ধ ছিল। দেশে কোনো গণতন্ত্র ছিলো না। মানুষের কথা বলার কোনো অধিকার ছিলো না। ফ্যাসিবাদ তার অপশাগণ দিয়ে জনগণের টুটি চেপে ধরেছিলো। গুম-খুনের মহোৎসব চলেছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছিলো। বিচার ব্যবস্থাকে স্বৈরাচার সরকার পরিপূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়ে ছিলো। ব্যাংক ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মাধ্যমে এদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছিলো। এই অবস্থা থেকে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অসংখ্য রক্তের বিনিময়ে জাতি মুক্ত হয়েছে। তাই আমাদের এই শহীদদের আত্মত্যাগের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদান করতে হবে। নতুন বাংলাদেশে আবার যেন কোন ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান শাগণ ব্যবস্থায় চলমান সমস্যা ও সংকট নিরসনে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের বিকল্প নেই। জনগণের ভোটের ন্যায্য প্রতিফলন, ভোট অপচয় রোধ, স্বৈরাচারী সরকার ব্যবস্থার বিলোপ, রাজনৈতিক বৈচিত্র্য ও বহুত্ববাদিতা প্রতিষ্ঠা, গণতান্ত্রিক পরিসরকে সমৃদ্ধ করা, নির্বাচনে পেশিশক্তি ও কালোটাকার কারসাজি রোধ, সর্বোপরি জবাবদিহিতা ও ভারসাম্যপূর্ণ সরকার গঠনে আনুপাতিক পদ্ধতি নির্বাচন প্রয়োজন। সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি প্রেরণ করতেও এই পদ্ধতি কার্যকর বলে উল্লেখ করেন তিনি।