সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলহাজ্ব মাসুদ সাঈদী বলেন, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা সহ কেউ যদি আমার সাথে দুর্নীতির সামান্যতম সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে পারে, এক টাকার সম্পৃক্ততার প্রমাণ বের করতে পারে- তাহলে আমি আর রাজনীতি করবো না। তিনি বলেন, জিয়ানগর উপজেলায় আমি চেয়ারম্যান ছিলাম, আপনাদের সামনে সবকিছু আছে। আমি আওয়ামী শাসনামলে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি মনে করি সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা সংস্থা হল সাংবাদিক ভাইয়েরা। মাসুদ সাঈদী বলেন, আমার কোন দুর্নীতি থাকলে সাংবাদিক ভাইয়েরা এতদিনে বের করে ফেলতেন। আল্লামা সাঈদীর পরিবার থেকে প্রার্থী হওয়ার কারণে পরিবার তন্ত্র হলো কিনা? আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীতে পরিবার তন্ত্রের কোন স্থান নেই। জামায়াতের কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত হয়, কে কোথায় নির্বাচন করবে, কে নির্বাচন করবে না। এব্যাপারে ব্যক্তি বা পরিবারের এখানে কোন কিছু করার সুযোগ নেই।গতকাল মঙ্গলবার ১৮ মার্চ সকাল দশটায় পিরোজপুর উপজেলা পরিষদের শহীদ ওমর ফারুক মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পিরোজপুর জেলা শাখার মিডিয়া বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মাসুদ সাঈদী উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক সাইদুল কবির বশির এর সঞ্চালনায় জেলা মিডিয়া বিভাগের সম্পাদক অধ্যাপক সোহরাব হোসাইন জুয়েল এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা আমীর অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বিভিন্ন প্রিন্টিং ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ মাসুদ সাঈদীকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং মাসুদ সাঈদী তার উত্তর দেন। এ সময় পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রেজাউল ইসলাম শামীম, সেক্রেটারি তানভীর আহমেদ, অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে এস এম সোহেল বিল্লাহ কাজল, জুবায়ের আল মামুন, জহিরুল হক টিটুসহ পিরোজপুরের প্রায় সকল প্রিন্টিং ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জুবায়ের আল মামুন, নাকিব নাসরুল্লাহ প্রমূখ।
মাসুদ সাঈদী বলেন, আমরা বাক স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছি। গত সাড়ে ১৭ বছর মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচন পায়নি। আমরা সব সময়ই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিলাম। আওয়ামী লীগের গোঁয়ার্তুমির কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যায়নি। ৫ই আগস্ট এর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে মানুষ এখন সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা চিন্তা করতে পারছে। তিনি বলেন, আপনারা সাক্ষী বিগত সময়ে কোন মিডিয়া স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, দল আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনারা যদি আমাকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেন তাহলে আমি আমার পিতা আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মত মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চাই। তিনি বলেন আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি চাই না। সারা দেশে জামায়াত কোথাও প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে না। ইদানিং বিভিন্ন মিডিয়ায় উত্থাপিত কিছু অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, আপনারা সাংবাদিক এবং সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আছে কেউ যদি আমার কোথাও কোন দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ততা খুঁজে পান তাহলে আমি আর রাজনীতি করবো না।
প্রেসক্লাব সভাপতি রেজাউল ইসলাম শামীম তার বক্তব্যে বলেন, আমরা চাই আপনি আমাদের সাথে সব সময় কথা বলবেন।
দৈনিক ইত্তেফাকের ব্যুরো প্রধান, মনিরুজ্জামান নাসিম আলী বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন করে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলেন।
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। অনুষ্ঠান শেষে সকলকে অনুষ্ঠানের তরফ থেকে ইফতারীর প্যাকেট বিতরণ করা হয়।