চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার পর কেন্দ্রীয় কমিটি বাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সারাদেশের সব কমিটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার (২৭ জুলাই) বিকেলে শাহবাগে সাবেক সমন্বয়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রিফাত রশিদ এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে রিফাত রশিদ জানান, অর্গানুগ্রাম অনুযায়ী আজকের এই সময় থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি বাদে সারাদেশের সকল কমিটির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি জানান, তারা বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন। জুলাই আন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এমন কাউকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

রিফাত রশিদ এই ব্যানার ব্যবহার করে অপকর্ম ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেন।

রিফাত রশিদ আরও বলেন, ‘চলমান চাঁদাবাজির ঘটনায় আমরা দায় স্বীকার করেছি। আমরা জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সকল ধরনের কাজ করে যাবো। সামনের দিনগুলোতে আমাদের কর্মকাণ্ডে আপনারা তা দেখতে পাবেন।’

গত কয়েক দিন ধরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যেই গতকাল রাজধানীর গুলশানে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচজন আটক হন, যারা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা বলে দাবি করেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

২০২৪ সালে কোটা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ)। এটি কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে অসহযোগ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

২০২৪ সালের ১ জুলাই সংগঠনটি সৃষ্টি হয় এবং সৃষ্টির পরপরই আন্দোলন সফলের জন্য ৮ জুলাই সংগঠনটি ৬৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করে, যার মধ্যে ২৩ জন সমন্বয়ক ও ৪২ জন সহ-সমন্বয়ক ছিলেন। আন্দোলনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার পর ৩ আগস্ট সংগঠনটি দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ১৫৮ সদস্যের সমন্বয়ক দল গঠন করে, যার মধ্যে ৪৯ জন সমন্বয়ক ও ১০৯ জন সহ-সমন্বয়ক ছিলেন।