DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

রাজনীতি

বসুন্ধরায় সারজিস আলমের ওপর হামলা, যা জানা গেল

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। মধ্যরাতে ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন

অনলাইন ডেস্ক
sarjis-20250306104307

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। মধ্যরাতে ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ইফতারের পর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির সহযোদ্ধাদের সঙ্গে চায়ের আড্ডা দিতে এবং তাদের কথা শুনতে যাই। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তাদের সাথে গল্প-আড্ডা হয়, তাদের কথা শোনা হয়, চায়ের আড্ডা হয়।

NSU, IUB, AIUB, UIU এই ৪ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক সহযোদ্ধাদের সাথে আড্ডা দিয়ে NSU’র সামনে দিয়ে হেঁটে আসছিলাম। আমার সাথে ১৫-২০ জন প্রাইভেটের সহযোদ্ধারা ছিল। পরে NSU’র গেটের সামনে দেখি ১০-১২ জন ঢাবি সিন্ডিকেট নিয়ে স্লোগান দিচ্ছে। এর মধ্যে ছাত্রদলের সেন্ট্রাল নেতা আহমেদ শাকিল ছিল। আমি এগিয়ে যাই তাদের কথা শুনতে। কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমার সাথে থাকা প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করতে থাকে। ওদের ১০-১২ জনের মধ্যে ১-২ জনকে স্টুডেন্ট মনে হলেও বাকিদের দেখে ভাড়া করা টোকাই দুষ্কৃতকারী মনে হচ্ছিল। বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই এদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে আমি দুপক্ষকে চলে যেতে বলি এবং চলে আসি।

পরবর্তীতে ছাত্রদলের শাকিল তার নেতৃত্বে তার সঙ্গে থাকা টোকাই দুষ্কৃতকারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে পূর্বে আমার সঙ্গে থাকা ওই প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছেলেদের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে এবং সরাসরি মাথায় ও পিঠে আঘাত করে একাধিক জনকে রক্তাক্ত করে। ছাত্রদলের শাকিলসহ বাকি সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সারজিস আলম বলেন, ১৬ বছর ধরে টোকাইলীগের দ্বারা নির্যাতিত হওয়ার পর আজকে যদি ছাত্রদলের কেউ একইভাবে টোকাইলীগের সন্ত্রাসীদের মতো আচরণ করে তাহলে তাদেরও পরিণতি টোকাইলীগের মতো হতে খুব বেশি দিন লাগবে না। শিক্ষা নেন, সময় থাকতে নিকট অতীত থেকে শিক্ষা নেন।’

এ ঘটনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট এলায়েন্স অব বাংলাদেশ ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তা জানান।

পোস্টে লেখা হয়, বসুন্ধরা আবাসিকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেইটে সারজিস আলমের আগমন নিয়ে বৈছা ও ছাত্রদল সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক বসুন্ধরা এলাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এদিকে সারজিস আলমের আগমনের খবরে নর্থ সাউথের ৮ নম্বর গেইটে জড়ো হন ছাত্রদল সমর্থকরা।

আরও লেখা হয়, দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও দল ঘোষণার দিন প্রাইভেট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে সারজিস আলমকে জেরা করতে থাকেন। এ সময় সারজিসের সঙ্গে থাকা একাংশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের তর্কাতর্কি থেকে হাতাহাতি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে সারজিস আলম দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে হাতাহাতির মধ্যেই বৈছা সমর্থক মুশতাক তাহমিদকে ছুরিকাঘাত করা হয় এবং পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মুশতাক বর্তমানে আংশকামুক্ত আছেন।

পোস্টে আরও লেখা হয়, দুই পক্ষের এই হাতাহাতির ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিয়ে এই ঘটনায় নর্থ সাউথের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের জন্য বিব্রতকর ও মানহানিকর। শিক্ষার্থীরা এই ঘটনার মাধ্যমে আবারো ক্যাম্পাস ভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিয়ে তাদের আশংকার কথা জানিয়েছেন।

কিভাবে পোচ দেওয়া হয়েছে, কারা দিয়েছে, এটা বের করা খুবই সহজ। নর্থ সাউথের গেইটে ও আইইউবির গেইটে খুবই উন্নত সিসি ক্যামেরা আছে, ফুটেজ দেখলে জানা যাবে কিভাবে কেউ আহত করেছে।

এদিকে উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, “পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নিয়ে দুই পক্ষ থানায় এসেছে। সারজিস আলমও আছেন। দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি।”