পবিত্র মাহে রমযান যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালনের জন্য শ্রমজীবী মানুষ ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। গতকাল শনিবার দেয়া যৌথ বিবৃতিতে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান বলেছেন, রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের অনাবিল বার্তা নিয়ে মাহে রমযান আমাদের দ্বারপ্রান্তে সমাগত। তাকওয়া ভিত্তিক ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের জন্য রমযানের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। রমযান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার। রমযান বান্দাহকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকটবর্তী করে। মূলত রমযানের মাধ্যমে বান্দাহ খোদাভীতি অর্জন করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর দেখানো পথে জীবন পরিচালনার শিক্ষা অর্জন করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হাদিসে কুদসিতে বলেছেন, রমযান আমার জন্য। আমি এর প্রতিদান দিবো। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন স্বয়ং যখন রমযানের পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তখন বোঝা যাচ্ছে রমযানের গুরুত্ব অপরিসীম।
নেতৃদ্বয় বলেন, মাহে রমযান সম্মানিত হয়েছে আল কুরআনের জন্য। মাহে রমযানে আল কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। যে রাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে সে রাতকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলেছেন। যে কুরআনের কারণে রমযান এতটা সম্মানিত হলো আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষসহ দেশবাসীকে সেই কুরআনের পথে চলার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআনকে পূর্ণাঙ্গ অনুসরণের জন্য আহ্বান করছি। একই সাথে কুরআনের আলো উদ্ভাসিত শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
পবিত্র মাহে রমযান উপলক্ষে দেশের শ্রমজীবী মানুষদের কর্মঘণ্টা হ্রাস করার জন্য মালিকদের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে রমযানের ইবাদত যথাযথভাবে পালনের জন্য কর্মক্ষেত্রে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আহ্বান করছি। শ্রমিকদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর জন্য মালিকদের প্রতি বিশেষ নিবেদন করছি। বিশেষত শ্রমিকরা যেন সেহরি ও ইফতারে মানসম্মত খাবার গ্রহণ করতে পারে সে উদ্যোগ মালিকদের গ্রহণ করতে হবে। শ্রমিকদের সেহরি ও ইফতারের জন্য বিশেষ ভাতা দেওয়া হলে নিঃসন্দেহে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মালিকদের ব্যবসা বাণিজ্যে সমৃদ্ধি দান করবেন। একই সাথে মালিকদের কাল কেয়ামতের ময়দানে সম্মানিত করবেন।
নেতৃদ্বয় ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, মাহে রমযানে শ্রমজীবী মানুষের রোজা নির্বিঘ্ন করতে দ্রব্যমূল্যের হ্রাস করুন। সকল পণ্যের দাম শ্রমজীবী মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখুন। বাজার অস্বাভাবিক করা থেকে বিরত থাকুন। খাদ্য মজুদ ও দাম বৃদ্ধি করে শ্রমজীবী মানুষদের কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। সর্বোপরি চাল, ডাল, তেল, ছোলা, বুট, খেজুরসহ রমযানের পণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা করুন। রোজাদারদের সেবার বিনিময়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন।
শ্রমিক ভাইবোনদের প্রতি আমাদের নিবেদন হচ্ছে, পবিত্র মাহে রমযানের যথাযথ হক আদায় করুন। রমযানে বেশি বেশি কুরআন ও হাদিস অধ্যয়ন করুন। ব্যক্তিগত আমল বৃদ্ধি করুন। জামায়াতের সাথে নামায আদায় করুন। তারাবিহ ও কিয়ামুল লাইল আদায় করুন। আল্লাহর কাছে নিজেদের ভুল-ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আত্মীয়স্বজনের হক আদায় করুন। নিজেদের সামর্থ্যরে আলোকে প্রতিবেশী ও শ্রমজীবী মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করুন। বিশেষত কর্ম-অক্ষম ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ান।
আসুন, পবিত্র মাহে রমযানের উছিলায় কাল কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর কাছে যেন উত্তীর্ণ হতে পারি সেজন্য একে অপরের জন্য দোয়া করি। আমাদের দেশের প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রহমত নাজিল করুন। সকল বিপদ-আপদ থেকে দেশবাসীকে হেফাজত করুন।