বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর একটা দল নিজেদের দেশের মালিক মালিক ভাবা শুরু করেছিল। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ কারো বাবার দেশ নয়, এ বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের। এ দেশ কীভাবে চলবে তা ঠিক করবে বাংলাদেশের জনগণ। তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় জন্মভূমি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এ বাংলাদেশে আল্লাহর আইন এবং সৎ লোকের শাসন কায়েম করার লড়াই করছি। যতদিন আল্লাহর আইন এবং সৎ লোকের শাসন কায়েম না হবে ততদিন আমাদের লড়াই চলতেই থাকবে ইনশাআল্লাহ। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের অসংখ্য ভাইকে ক্রসফায়ার দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ ভাই-বোনদের কারাগারে বছরের পর বছর বন্দি করে রেখেছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে লক্ষ্মীপুর ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি হাসিনার অতিরিক্ত দালালি করার কারণে তারা নিজেরাই রাজনীতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অন্য একটি দল এর আগে যখন ক্ষমতায় ছিল দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তারা স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর বিগত ১৫ মাসে আগের দুর্নীতি চাঁদাবাজির ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছে। এ কারণেই আমরা সৎ লোকের শাসন চাই। জনগণ মনে করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ নিরব বিপ্লব করে দাঁড়িপাল্লাকে বিজয়ী করবেন ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের অন্যতম সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, জনগণের ভালোবাসা ও দোয়ায় আগামী দিনে এই দেশের জনগণের দায়িত্ব পালন করার মতো পর্যায়ের আস্থা তৈরি করতে পেরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দেশে ফ্যাসিবাদ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল ১৫ বছর। ২০০৬ সালের ২৮ শে অক্টোবর থেকে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ জন্মের উদ্বোধন শুরু হয়। ইসলামি ছাত্রশিবির এবং জামায়াতে ইসলামীর শাহাদাতের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে জামায়াতের ১১ জন শীর্ষ নেতা জীবন দিয়েছেন, ৫০০ নেতাকর্মী শহীদ হয়েছে, এক লক্ষের উপরে নেতাকর্মী জেল খেটেছে। দুই হাজার মহিলা কর্মী জেল খেটেছে, ৫ হাজারের উপরে নেতাকর্মী এখনো পর্যন্ত পঙ্গুত্ব বরণ করে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।
অতীতে রাজাকার প্রসঙ্গ তুলে দেশের মানুষকে দ্বিধা বিভক্ত করা হয়েছে। মানুষ মনে করে এই বিভক্তি বিভাজনের রাজনীতি 'আমি কে, তুমি কে, রাজাকার' এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অনেক অপবাদ দেওয়া হয়েছে। খুলনায় হিন্দুদের সম্মেলন কি প্রমাণ করে? হিন্দুরা বলছে, আমরা তাদেরকে আর চাই না, এখন আমরা দাঁড়িপাল্লাকে চাই। একটি দল এখন মহিলাদের কাজে বাঁধা দিচ্ছে। যত বাঁধা দিচ্ছে মহিলাদের মধ্যে কাজের গতি আরো তীব্রতা লাভ করছে। এবার পেশিশক্তি দিয়ে নির্বাচন হবে না। তিনি বলেন, সুস্থ নির্বাচনের জন্য সকলকে পাহারাদারির দায়িত্বে থাকতে হবে। যত শক্ত থাকবেন প্রশাসন আপনাদেরকে তত বেশি সহযোগিতা করবে। ইতিপূর্বে যারা সরকার গঠন করেছিল দেশ চালিয়েছে তারা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে পারেনি। আমরা ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছি, এবার আমাদের যুদ্ধ হবে লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে।
লক্ষ্মীপুর ফোরামের সভাপতি বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাক্তার আনোয়ারুল আজিম এর সভাপতিত্বে এবং বিশিষ্ট ব্যাংকার মাহমুদুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর ৪ (রামগতি- কমলনগর) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এ আর হাফিজ উল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সালেহ উদ্দিন সহ লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।